রাজধানীর বঙ্গবাজার মার্কেটের ধ্বংস্তূপে এখনও কোথাও কোথাও আগুন জ্বলছে, আবার কোথাও বের হচ্ছে ধোঁয়া।
গত ৪ এপ্রিল সকাল ৬টার পর ওই মার্কেটে আগুন লাগে, ফায়ার সার্ভিস ৭ এপ্রিল তা পুরোপুরি নির্বাপণের ঘোষণা দেয়। তবে রোববার দুপুরেও আগুন ও ধোঁয়া দেখা গেছে সেখানে।
ধ্বংসস্তূপের পাশাপাশি পোড়া ভবনের ভেতরেও আগুন দেখা গেছে। পোড়া কাপড়ের ভেতর থেকে এই আগুন জ্বলছে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
ফায়ার সার্ভিসের আগুন নেভানোর ঘোষণার পর শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে বঙ্গবাজার ধ্বংসস্তূপ থেকে বর্জ্য অপসারণ শুরু হয়। অবশ্য এই বর্জ্য অপসারণ করতে কয়দিন লাগবে সেটা এখনো জানাতে পারেনি মালিক সমিতি।
ঘটনাস্থলে গিয়ে রোববার দুপুরে দেখা যায়, বঙ্গবাজারের পাশে এনেস্কো টাওয়ার থেকে পুড়ে যাওয়া কাপড় ওপর থেকে ফেলে নিচে প্রধান সড়কে জমা করা হচ্ছে। পাশাপাশি ধ্বংসস্তূপের বর্জ্য জমা করা হচ্ছে প্রধান সড়কে। টিন ও লোহা ট্রাকে করে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে।
ধ্বংসস্তূপ থেকে লোহা ও টিন কেটে অপসারণ করছিলেন মো. সেলিম রেজা। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘আগুনের তাপ এখনো যায় নাই। তার ওপর রোদের তাপ। তাই থেকে থেকে আগুন ও ধোঁয়া বের হচ্ছে। এর ভেতর দিয়েই আমরা কাজ চালাচ্ছি এগুলো সরানোর।’
আরেক কর্মী মো. রবিউল বলেন, ‘এখানের ময়লা পরিষ্কার করতে বার বার গলা শুকিয়ে আসছে। ময়লার ভেতরে প্রচুর তাপ। ওপর থেকে আমরা যত বার লোহা কেটে বের করছি, ততবারই ভেতরের ধ্বংসস্তূপ থেকে আগুন জ্বলে উঠছে।
‘এই আগুনের তাপে ঠিক মতো কাজ করা যাচ্ছে না। এছাড়া ৭-৮ জায়গায় ধোঁয়া জ্বলছে, এর কারণে আমাদের কাজ করতে অনেক সমস্যা হচ্ছে।’
আগুনের বিষয়ে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘অগ্নিকাণ্ডের স্থানে ব্যবসায়ীরা বসতে চাচ্ছেন। কিন্তু এখনো ধ্বংসস্তুপ সরানো যায়নি। আমরা প্রথমে ভেবেছিলাম দু-একদিনেই পরিস্কার করা যাবে। কিন্তু যেখানে হাত দিচ্ছে সেখানেই আগুন।
‘ফলে নতুন করে আবার পানি দিয়ে নেভাতে হচ্ছে। এই কারণে সরাতে সমস্যা হচ্ছে। আগুনসহ ট্রাকে তোলা যাবে না। এটা ঝুঁকিপূর্ণ। ঈদের আগে ব্যবসায়ীরা বসতে পারবে কি না এটা এখন বলতে পারছি না।’
বঙ্গবাজারে এখনও জ্বলা আগুনের বিষয়ে ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের মিডিয়া সেল কর্মকর্তা আনোয়ারুল ইসলাম দোলন বলেন, ‘বঙ্গবাজার মার্কেট এলাকায় এখন ধ্বংসস্তূপের ডাম্পিংয়ের কাজ চলছে। ফলে ভেতর থেকে মাঝেমধ্যে ছোট আগুন ও ধোঁয়া বের হয়ে আসছে। তবে এটা কোনো সমস্যা না।’
তিনি বলেন, ‘আর শ্রমিকরা যদি সমস্যা মনে করে, তাদের আমরা জানাতে বলেছি। তারা জানালে আমরা সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে গিয়ে এসব বিষয় সমাধান করব।’
রাস্তায় অল্প কিছু ভাসমান দোকান
বঙ্গবাজারের দক্ষিণ পাশের সড়কে কয়েকজন ব্যবসায়ী অস্থায়ী দোকান বসিয়েছেন। এর ফলে ফ্লাইওভারের নিচে এই গুলিস্তান সড়কে প্রচুর যানজট দেখা দিয়েছে।
সড়কে ব্যাগ ব্যবসায়ী মো. নাহিদ হাতের ইশারা দিয়ে বললেন, ‘এখানে আমার দোকান ছিল। গত বৃহস্পতি, শনি ও রোববার রাস্তায় দোকান বসিয়েছি। তবে ব্যবসা তেমন ভালো না।’
আরেক কাপড় ব্যবসায়ী আব্দুর সাত্তার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রাস্তায় অল্প কিছু দোকানি দোকান বসিয়েছেন। তবে বেচাকেনা তেমন নাই। সামনে ঈদ তাই কষ্ট হলেও রাস্তায় বসেছি।’