রাজধানীর উপকণ্ঠ সাভারে রানা প্লাজা ধস ও হতাহতের ঘটনায় হওয়া হত্যা মামলায় ভবনটির মালিক সোহেল রানার জামিন স্থগিত করেছে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত।
রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের শুনানি নিয়ে রোববার আপিল বিভাগের বিচারপতি আবু জাফর সিদ্দিকীর চেম্বার আদালত এ আদেশ দেয়।
গত ৬ এপ্রিল বিচারপতি আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি শাহেদ নুরুউদ্দিনের হাইকোর্ট বেঞ্চ সোহেল রানাকে জামিন দিয়েছিল।
গত বছরের ১ মার্চ রানা প্লাজা ধস ও হতাহতের ঘটনায় হওয়া হত্যা মামলায় ভবনটির মালিক সোহেল রানাকে কেন জামিন দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করে হাইকোর্ট। সেই রুলের চূড়ান্ত নিয়ে সোহেল রানাকে জামিন দেয় হাইকোর্ট।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে ধসে পড়ে সাভারের রানা প্লাজা। ভবনের নিচে চাপা পড়েন পাঁচ হাজার পোশাক শ্রমিক। ওই ঘটনায় এক হাজার ১৩৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। প্রায় দুই হাজার শ্রমিক আহত ও পঙ্গু হন। ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে দুই হাজার ৪৩৮ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।
ভবন ধসে পড়ার পাঁচ দিন পর ২৯ এপ্রিল ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পথে সোহেল রানাকে যশোরের বেনাপোল থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ভবন ধস ও প্রাণহানির ঘটনায় সাভার থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ওয়ালী আশরাফ ভবন নির্মাণে অবহেলা ও ত্রুটিজনিত হত্যা মামলা করেন। ২০১৫ সালের ২৬ এপ্রিল সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার বিজয়কৃষ্ণ কর ভবন মালিক সোহেল রানাসহ ৪১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন। মামলায় সাক্ষী করা হয় ৫৯৪ জনকে।
মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানা, রানার বাবা আব্দুল খালেক, রানার মা মর্জিনা বেগম, সাভার পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কমিশনার হাজি মোহাম্মদ আলী, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক (আর্কিটেকচার ডিসিপ্লিন) এ টি এম মাসুদ রেজা, প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসাইন, সাভার পৌরসভার মেয়র মো. রেফাতউল্লাহ, সাভার পৌরসভার সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উত্তম কুমার রায়, নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম, সাবেক সহকারী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান, সাবেক উপ-সহকারী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান রাসেল, সাভার পৌরসভার সাবেক টাউন প্ল্যানার ফারজানা ইসলাম, লাইসেন্স পরিদর্শক মো. আব্দুল মোত্তালিব, পৌরসভার সাবেক সচিব মর্জিনা খান, সাবেক সচিব মো. আবুল বাশার, ফ্যান্টম এপারেলস লিমিটেডের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আমিনুল ইসলাম, নিউ ওয়েব বটমস লিমিটেডের এমডি বজলুস সামাদ ও ইথার টেক্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. আনিসুর রহমান।
২০১৬ সালের ১৮ জুলাই ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ এস এম কুদ্দুস জামান আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।