একদিকে স্থানীয় এক বাসিন্দা। অন্যদিকে সহকারী শিক্ষক। দুজনের মধ্যে হচ্ছে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়।
স্থানীয় ওই ব্যক্তির উদ্দেশে শিক্ষককে বলতে শোনা যায়, ‘আমাদের ক্ষমতা আছিল। আমরা নিয়ে আইছি।’
এর পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় ব্যক্তিটি বলেন, ‘আপনার কী ক্ষমতা আছে? চুরি করার?’
উত্তরে শিক্ষক বলেন, ‘হ্যাঁ, চুরি করার ক্ষমতা আছে। এখানে কী? আপনার কী?’
দুজনের ১ মিনিটের বেশি সময় ধরে বাগ্বিতণ্ডার একটি ভিডিও শুক্রবার ভাইরাল হয়েছে অনলাইনে। ওই দিন সকাল ১০টার দিকে ঘটনাটি ঘটে নাটোরের গুরুদাসপুরের নাজিরপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে।
প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ছয়টি ট্যাব মেধাবীদের না দিয়ে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ সহকারী শিক্ষকদের ছেলে-মেয়েদের মধ্যে বিতরণের অভিযোগ ওঠার পর প্রতিবাদ জানাতে স্কুলে হাজির হন স্থানীয় মকুল হোসেন। তার সঙ্গে সহকারী শিক্ষক আকরামুল ইসলাম বাগ্বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন।
এ বিষয়ে মকুল হোসেন বলেন, ‘বৃহস্পতিবার মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহারস্বরূপ মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে ট্যাব বিতরণ করা হয়। খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারলাম, নাজিরপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে মেধাবী শিক্ষার্থীরা কেউ ট্যাব পায়নি। ট্যাব পেয়েছে প্রধান শিক্ষকের ভাতিজি ও ভাগ্নি, সহকারী শিক্ষক সুলতান হোসেনের মেয়ে, আকরামুল ইসলামের ছেলে, সাইদুল ইসলামের মেয়ে, বিদায়ী একজন শিক্ষার্থীসহ আরও একজন সহকারী শিক্ষকের ছেলে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকদের ছেলে-মেয়ে হওয়ার সুবাদে তারা ট্যাব পেয়েছে।
‘মূলত প্রকৃত মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে ট্যাব কেন দেয়া হলো না, এই বিষয়ে বিদ্যালয়ে গিয়ে জানতে চাইলে সহকারী শিক্ষক আকরামুল ইসলাম উত্তেজিত হয়ে পড়েন। আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অনিয়মকারী শিক্ষকসহ সহকারী শিক্ষকের বিচার দাবি করছি।’
এ বিষয়ে সহকারী শিক্ষক আকরামুল ইসলাম বলেন, ‘উত্তেজিত হয়ে ভুলবশত কথাগুলো বলে ফেলছি। এটা আমার ভুল হয়েছে।’
নাজিরপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফরিদ মন্ডল বলেন, ‘একটু ভুলভ্রান্তির কারণে এই সমস্যা হয়েছে। ট্যাব যাদের দেয়া হয়েছিল, তাদের কাছ থেকে ফেরত নিয়ে প্রকৃত মেধাবী শিক্ষার্থীদের হাতে ট্যাব তুলে দেয়া হয়েছে। সহকারী শিক্ষকের উত্তেজিত হওয়ার বিষয়ে আমার জানা নেই।’
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সেলিম আকতার বলেন, ‘ইতোমধ্যেই ওই বিদ্যালয়ের অভিযোগটি আমলে নেয়া হয়েছে। সহকারী শিক্ষক যে কথা বলেছে, সেটা তিনি বলতে পারেন না।’
ট্যাব বিতরণে অনিয়ম ও সহকারী শিক্ষকের আচরণের বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।