বদলি হওয়ার আগমুহূর্তে উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ২২১ বস্তা ত্রাণ সামগ্রী হস্তান্তর করেছেন বগুড়ার ধুনটের উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সঞ্জয় কুমার মহন্ত।
ত্রাণ সামগ্রীগুলো ২০২১ সালে করোনাভাইরাসের সময়কার। খাবার অযোগ্য এসব ত্রাণের কথা জানাজানি হওয়ার পর থেকে স্থানীয় অনেকেই সমালোচনা করেছেন ইউএনওর।
বিষয়টি খতিয়ে দেখতে শুক্রবার এক সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম।
ইউএনও সঞ্জয় কুমার মহন্তকে গত ৭ মার্চ ধুনট উপজেলা থেকে রাজশাহীর গোদাগাড়ি উপজেলায় বদলি করা হয়। গত বৃহস্পতিবার ছিল ধুনট উপজেলায় তার শেষ কর্মদিবস। ওই দিন বিকেল ৩টার দিকে উপজেলা পরিষদের সরকারি বাসভবন থেকে ২২১ বস্তা নষ্ট হয়ে যাওয়া ত্রাণ সামগ্রী উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল হাই খোকনের সরকারি বাসভবনে রাখেন তিনি।
উপজেলা চেয়ারম্যানের সরকারি বাস ভবনে গিয়ে দেখা যায়, সাড়ে ১৫ কেজি ওজনের প্রতিটি বস্তায় চাল, ডাল, লবণ, তেল, চিড়া, নুডলস, চিনি, হলুদ, মরিচ, ধনিয়ার গুঁড়া রয়েছে। বস্তার গায়ে লেখা ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় ২০২১-২০২২ অর্থবছর’। এর তারিখ ০৭.০৭.২০২১ তারিখ।
উপজেলার চেয়ারম্যানের বাসভবনে নেয়ার সময় দেখা যায় অধিকাংশ বস্তা ইঁদুরে কেটেছে। প্রায় দুই বছর এসব ত্রাণ মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে খাবার অযোগ্য হয়ে পড়েছে।
উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল হাই খোকন বলেন, ‘ইউএনও সঞ্জয় কুমার মহন্ত শেষ কর্মদিবসে ২২১ বস্তা ত্রাণসামগ্রী শ্রমিক দিয়ে আমার সরকারি বাসায় রেখেছেন। রেখে দেয়া ত্রাণসামগ্রী অনেকটাই খাবার অযোগ্য।’
ইউএনও সঞ্জয় কুমার মহন্ত বলেন, ‘ত্রাণ সামগ্রীগুলো আমার বদলিজনিত কারণে উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছে দেয়া হয়েছে।’
এর চেয়ে বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি।
এমন বাস্তবতায় গরিবদের মধ্যে বিতরণের ত্রাণ ঘরে আটকে রেখে কী লাভ করেছেন ইউএনও, সে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়রা। তাদের ভাষ্য, প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘরে লুকিয়ে রেখে তিনি সরকারি কাজে গাফিলতির পরিচয় দিয়েছেন। এ জন্য তার বিচার হতে হবে।
ধুনট উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান টি আই এম নুরুন্নবী তারিক বলেন, ‘ইউএনও সঞ্জয় কুমার মহন্ত সরকারি ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ না করে নষ্ট করেছেন। বিষয়টি তদন্তপূর্বক ইউএনওর শাস্তি হওয়া উচিত।’