চট্টগ্রামের আকবারশাহ এলাকায় পাহাড় কাটার সময় মাটি ধসে খোকা নামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও চারজন।
শুক্রবার বিকেল পৌনে ছয়টার দিকে আকবরশাহ মাজারের পাশে বেলতলি ঘোনা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল মালেক বলেন, ‘মোট ১২ জন শ্রমিক ঘটনাস্থলে কাজ করছিলেন। এদের মধ্যে অসুস্থ অনুভব করায় দুজন চলে বাসায় যান। এরমধ্যে বিকেলে কাজ করার সময় অসাবধানতাবশত পাহাড় ধসে শ্রমিকদের পাঁচজন আংশিক চাপা পড়েন। ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়রা মিলে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানোর পর চিকিৎসক একজনকে মৃত ঘোষণা করেছেন।’
সন্ধ্যা সাতটার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী।
জেলা প্রশাসক সাংবাদিকদের বলেন, ‘এখানে আমরা একবার উচ্ছেদ অভিযান করেছি, একবার মোবাইল কোর্টও হয়েছে। যেসব জায়গা উচ্ছেদ করা হয়েছে, সেখানে এত মানুষ যে প্রটেকশন দিয়ে রাখা কঠিন। এখানে জনসাধারণের স্বতস্ফুর্ত অংশগ্রহন দরকার।’
পাহাড় ধসের ঘটনাস্থলে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের একটি প্রকল্প চলমান ছিল। ওই প্রকল্পের কাজ করতে গিয়েই মূলত পাহাড় ধসের ঘটনাটি ঘটে। এই বিষয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শনের সময় সিটি করপোরেশনের মেয়র বলেন, ‘করপোরেশনের একটা প্রজেক্ট ছিল এখানে। কিন্তু পাহাড় এভাবে কাটা হচ্ছে, তা আমাদের জানা ছিল না। এখানে লোকজনকে আমরা বেশ কয়েকবার সরিয়ে দিয়েছি। সরিয়ে দেয়ার পরেও আবার আসে। এখানে পাহাড় দখলে ক্ষমতাশালী বা প্রভাবশালী যেই জড়িত থাকুক, তদন্তে বেরিয়ে আসলে অবশ্যই এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এদিকে ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রাকিব হাসানকে আহ্বায়ক করে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাত সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসনের এনডিসি তৌহিদুল ইসলাম জানান, তদন্ত কমিটিতে কাট্টলী সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি), চসিক মেয়রের একজন প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) একজন প্রতিনিধি, পরিবেশ অধিদপ্তরের একজন প্রতিনিধি, আকবরশাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের একজন প্রতিনিধিকে রাখা হয়েছে।
তাৎক্ষনিক নিহতের দাফনের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষে ২৫ হাজার টাকা অনুদান দেয়া হয়েছে বলেও জানান চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট।
দুর্ঘটনাস্থলে ১১ ফেব্রুয়ারি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে পাহাড় কাটায় ব্যবহৃত এস্কেভেটরসহ একজনকে আটক করে ৭ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয় জেলা প্রশাসন। পরবর্তীতে পাহাড় কাটায় জড়িত কয়েকজনের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলাও করা হয়।