প্রেম করে বিয়ে করায় পরিবারের সঙ্গে মনোমালিন্য চলছিল সানির। আবার তার স্ত্রীর সঙ্গে অন্তরঙ্গ সময়ে বিরক্ত করত সাত বছর বয়সী সৎ ভাই সৌরভ। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে শিশুটিকে শাশুড়ির বাড়িতে নিয়ে খুন করেন সানি। এরপর লাশ গুম করে রাখা হয় খাটের নিচে। এরপর আবার তারাই শিশুটি নিখোঁজ বলে মাইকিং চালান।
ঘটনাটি নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলা কুড়িপাড়া গ্রামে।
নিখোঁজের দুদিন পর বৃহস্পতিবার পরিত্যক্ত কচু গাছের ঝোপ থেকে উদ্ধার করা হয় শিশু সৌরভের মরদেহ। এ ঘটনায় নিহত শিশুর সৎ ভাই সানি, তার স্ত্রী আয়শা ও শাশুড়ি শিল্পী বেগমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ।
শুক্রবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার কার্যলয়ে সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) চাউলাউ মারমা জানান, গত মঙ্গলবার নিখোঁজ হয় সৌরভ। শিশুর বাবা অটোরিকশা চালক ও মা পোশাক কারখানায় ঝুট বাছাইয়ের কাজ করেন। সৌরভের মায়ের আগের সংসারের সন্তান অভিযুক্ত সানি।
সৌরভ নিখোঁজ হওয়ার পর মাইকিংয়ের পাশাপাশি তার পরিবার থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এর দুদিন পর বাড়ির পাশের কচু গাছের ঝুপের ভেতরে পাওয়া যায় শিশুটির লাশ। পরে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। তদন্তে বেড়িয়ে আসে শিশুকে হত্যার রহস্য।
পুলিশের ভাষ্য, সৌরভের সৎ ভাই সানি প্রেম করে বিয়ে করেছেন কয়েক মাস আগে। এ নিয়ে পরিবারের সঙ্গে তার মনোমালিন্য ছিল। এরমধ্যে ছোট ভাই সৌরভ ভাই ও ভাবির অন্তরঙ্গ সময়ে বিরক্ত করত।
এ ঘটনা সানির শাশুড়ি শিল্পী বেগমকে জানানো হলে তিনি সৌরভকে খুন করার পরিকল্পনার কথা জানান।
ঘটনার দিন সকালে সৌরভ বাইরে খেলতে গেলে তার বড় ভাই সানি তাকে ডেকে নিয়ে যান শিল্পী বেগমের ঘরে। সেখানে সানি তার ছোট ভাই সৌরভের পা চেপে ধরেন ও তার শাশুড়ি শিল্পী বেগম গলা টিপে হত্যা করেন। আর বাইরে থেকে পাহারা দিচ্ছিলেন সানির স্ত্রী আয়শা। হত্যার পর খাটের নিচে সৌরভের লাশ লুকিয়ে রাখা হয় । পরদিন মধ্য রাতে তাদের রান্না ঘরের বাইরে পরিত্যক্ত কচু গাছের ঝোপের ফেলে দেয় শিশুটির মরদেহ।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার চাউলাউ মারমা বলেন, এ ঘটনায় শিশু সৌরভের মা কুলসুম বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেছেন। এ মামলায় গ্রেপ্তার করা আসামিদের আদালতে পাঠানো হয়েছে। শিশুটির মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।