রাজশাহীতে নবজাতক চুরির দায়ে নিঃসন্তান এক দম্পতিকে কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। তাদের মধ্যে স্ত্রীর ১০ বছর ও স্বামীর ৫ বছরের জেল দেয়া হয়েছে। একইসঙ্গে তাদের অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে।
বুধবার সকালে রাজশাহী মানব পাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. আয়েজ উদ্দিন এই রায় ঘোষণা করেন। দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- মৌসুমি বেগম ও তার স্বামী সজিব আলী। তারা রাজশাহী নগরীর বোয়ালিয়া থানার তালাইমারী এলাকার বাসিন্দা।
রাজশাহী মানব পাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘২০২১ সালের ২০ জানুয়ারি নগরীর বাগানপাড়া এলাকার মাসুম রবি দাস তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী কমলী রবি দাস শিল্পীকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। রাতে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তিনি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন।
পরদিন সকালে মৌসুমি বেগম হাসপাতালে গিয়ে শিশুটিকে আদর করেন। শিশুটির মা বাচ্চাকে ঘুমিয়ে রেখে ওয়ার্ডের বাইরে গেলে কৌশলে শিশুটিকে নিয়ে পালিয়ে যান মৌসুমি। রাজশাহী মহানগর পুলিশ অভিযান চালিয়ে ২৭ ঘণ্টা পর ২৩ জানুয়ারি নগরীর মোন্নাফের মোড় পল্টুর বস্তি থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে। এ সময় নবজাতক চুরির দায়ে মৌসুমি ও তার স্বামী সজিবকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এই দম্পতি পুলিশকে জানান, তারা নিঃসন্তান। ৮ বছর আগে বিয়ে হলেও তাদের কোনো সন্তান হয়নি। এ কারণে তারা শিশুটিকে চুরি করেছিলেন। নবজাতক চুরির এ ঘটনায় ওইদিনই মাসুম রবি দাস মামলা করেন। সেই মামলায় বুধবার রায় ঘোষণা করে আদালত। মামলায় মোট ১৮ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে।
অ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় আদালত কারাদণ্ড দিয়েছে। প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানাও করা হয়েছে। অনাদায়ে আরও ৬ মাস করে কারাদণ্ড দেয়া হয়। রায় ঘোষাণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাদের রাজশাহী কারাগারে পাঠানো হয়।