বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

গোপালগঞ্জে ব্লাস্ট রোগে নষ্ট হচ্ছে বোরো ধান, দিশেহারা কৃষক

  •    
  • ৪ এপ্রিল, ২০২৩ ১৩:০৫

গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবদুল কাদের সরদার বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত জমির পরিমাণ নিরূপণ করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরি করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে। সেখান থেকে সরকারের উচ্চমহলে পাঠানো হবে। এরপর সরকার কোনো প্রণোদনা দেয়ার ব্যবস্থা করলে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের প্রণোদনা দেয়া হবে।’

গোপালগঞ্জে বোরো ধানে দেখা দিয়েছে ব্লাস্ট রোগ। এতে জমির ধান নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে উফসি-২৮ জাতের ধানে এর প্রকোপ বেশি। রোগের প্রভাবে ধান চিটা হওয়ায় আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকেরা। সেই সঙ্গে ধান নষ্ট হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।

কৃষকের কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা নিরূপণ করতে না পারলেও, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।

সোমবার বিকেলে সদর উপজেলার বোড়াশী গ্রামে ঘুরে দেখা যায়, বোরো মৌসুমে এ বছর গোপালগঞ্জ জেলায় উচ্চ ফলনশীল হাইব্রিড জাতের বোরো ধানের আবাদ করা হয়েছে। তবে চাল সরু ও খেতে সুস্বাদু হওয়ায় হাইব্রিড জাতের পাশাপাশি উফসি-২৮ জাতের বোরো ধানের আবাদ করেন কৃষকেরা। কিন্তু জেলার বিভিন্ন ধানের ক্ষেতে ব্লাস্ট রোগ দেখা দেয়ায় ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

যে-সব জমিতে উফসি-২৮ জাতের ধান রোপণ করা হয়েছে, সেখানে ধানের শিষ আসার সঙ্গে সঙ্গে তা পুড়ে গিয়ে চিটা হয়ে যাচ্ছে। সেই সাথে ইঁদুর গাছের গোড়া কেটে দেয়ায় নষ্ট হচ্ছে ধান গাছ। এতে ক্ষতির মুখে পড়েছেন জেলার কৃষকেরা। ধার দেনা করে বোরো ধানের আবাদ করেছেন তারা। ধান নষ্ট হওয়ায় ধার দেনা শোধ করবেন কীভাবে সেই চিন্তায় দিন কাটছে তাদের। ধান নষ্ট হওয়ায় সারা বছর খাদ্যের জোগান নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানা যায়, এ বছর জেলায় প্রায় ৮১ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে হাইব্রিড জাতের ৫৮ হাজার ৩৪০ হেক্টর, উফশী জাতের ২২ হাজার ২০০ হেক্টর ও স্থানীয় জাতের ৬ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করা হয়। এ বছর প্রায় ৩ লাখ ৮৬ হাজার ৩০৭ টন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ধান নষ্ট হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা নিয়ে সংশয়ে রয়েছে কৃষি বিভাগ।

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার বোড়াশী গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক মো. ফোরকান মোল্যা জানান, এ বছর তিনি সোয়া তিন বিঘা জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেছেন। এর মধ্যে হাইব্রিডের পাশাপাশি উফসি-২৮ জাতের ধান রোপণ করেন। কিন্তু এসব ধান গাছে ব্লাস্ট রোগ হওয়ায় ধান চিটা হয়ে গেছে। সেই সঙ্গে ভালো জমিতে ইঁদুর গোড়া কেটে দেয়ায় ধান গাছ নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে তিনি আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন।

টুঙ্গিপাড়া উপজেলার বর্ণি গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক মোহাব্বত আলী বলেন, ‘এ বছর ২ বিঘা জমিতে বোরো-২৮ জাতের ধান রোপণ করেছি। ধানের শিষ আসার সঙ্গে সঙ্গে তা পুড়ে গিয়ে চিটা হয়ে গেছে। এ বছর একটা ধানও ঘরে তুলতে পারবো না। সারা বছর কী খেয়ে বাঁচবো সেই চিন্তায় আছি।’

গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবদুল কাদের সরদার বলেন, ‘এ বছর জেলায় ৮১ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। বেশিরভাগ হাইব্রিড ধানের আবাদ হলেও উফশী জাতের ধান আবাদ করা হয়েছে। বোরো-২৮ জাতের ধান গাছের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ায় এ জাতের গাছ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। যে-সব জমিতে ব্লাস্ট রোগ হচ্ছে, সেসব জমির ধান চিটা হয়ে যাচ্ছে। ব্লাস্ট রোগ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা কৃষকদের ছত্রাকনাশক ঔষধ স্প্রে করার পরামর্শ দিচ্ছি এবং উঠান বৈঠক করা হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত জমির পরিমাণ নিরূপণ করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরি করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে। সেখান থেকে সরকারের উচ্চমহলে পাঠানো হবে। এরপর সরকার কোনো প্রণোদনা দেয়ার ব্যবস্থা করলে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের প্রণোদনা দেয়া হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর