প্রায় সাড়ে ছয় ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে এসেছে বঙ্গবাজারের আগুন। বহু ব্যবসায়ীকে পথে বসিয়ে দেয়া এ আগুন নিয়ন্ত্রণে বেশ বেগ পেতে হয়েছে উদ্ধারকারীদের।
মঙ্গলবার সকাল ৬টা ১০ মিনিটে মার্কেটটিতে আগুনের খবর পেয়ে ৬টা ১২ মিনিটে ফায়ার সার্ভিসের প্রথম ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। একে একে যোগ দেয় ৪৮টি ইউনিট।
ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, বেলা ১২টা ৩৬ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে বঙ্গবাজারের আগুন নিয়ন্ত্রণ ও উদ্ধার তৎপরতায় অংশ নিয়েছে সেনাবাাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং র্যাবের দল।
কেন্দ্রীয় ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার রাফি আল ফারুক জানান, মোট ৪৮টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে অংশ নেয়। আহতের সঠিক সংখ্যা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
আগুনে বঙ্গবাজার ও আশপাশে কত দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তার সঠিক সংখ্যা না জানা গেলেও ধারণা করা হচ্ছে এই সংখ্যা ৫ হাজারের মতো।
বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন জানিয়েছেন, বঙ্গবাজার মার্কেটে আড়াই হাজারসহ আশপাশের মার্কেটে আগুনে প্রায় ৫ হাজার দোকান ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। আনুমানিক দুই হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে প্রাথমিকভাবে থোক বরাদ্দ হিসেবে সাত কোটি টাকা ক্ষতিপূূরণের দাবি জানিয়েছেন তিনি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হঠাৎ আগুন জ্বলতে দেখেন তারা। খবর পেয়ে দ্রুতই পাশ থেকে উদ্ধারে অংশ নিতে আসে ফায়ার সার্ভিস। এরপর অল্প সময়েই বাড়তে থাকে বাহিনীর ইউনিটের সংখ্যা।
এক পর্যায়ে পানির সংকটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও রমনা এলাকা থেকে বহন করে নেয়া হয় পানি। হাতিরঝিল থেকেও হেলিকপ্টারে পানি নিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করতে দেখা যায়। বাতাসে আশপাশের ভবনে চলে যায় আগুন।
ওই এলাকায় সড়ক বন্ধ করে দেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয় র্যাব। তবে এতসবের মধ্যেও উৎসুক জনতার ভিড় ছিল লক্ষ্য করার মতো।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ফায়ার সার্ভিসের পাঁচ কর্মীসহ ১২ জনের মতো আগুনের ঘটনায় অসুস্থ হয়ে হাসপতালে আসেন। তাদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
এদিকে দুপুর সোয়া ১টার দিকে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের প্রবেশ গেটে ব্রিফিংয়ে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো.মাইন উদ্দিন জানান তিন কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে দেরি হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘পানির অভাব, বাতাস ও উৎসুক জনতা এই তিন কারণে বঙ্গবাজারের আগুন নেভাতে দেরি হয়েছে। ২০১৯ সালে এই মার্কেটকে ঝুকিপূর্ণ ঘোষণা করি আমরা। এর পরে ১০ বার নোটিস দেয়া হয়েছে। তারা আমলে নেয় নাই।’