বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) নাকি ব্যালট পেপারে হবে সে বিষয়ে বিএনপির কোনো আগ্রহ নেই। নির্বাচনকালীন দেশে কোন ধরনের সরকার থাকবে সেটাই হচ্ছে প্রধান সংকট।’
আগামী জাতীয় নির্বাচনে সংসদের ৩শ’ আসনেই ব্যালট পেপারে ভোটগ্রহণ করা হবে- নির্বাচন কমিশনের এমন সিদ্ধান্ত জানানোর পরিপ্রেক্ষিতে তিনি একথা বলেন।
রাজধানীর ইস্কাটনে লেডিস ক্লাবে রাজনীতিবিদদের সম্মানে বিএনপি আয়োজিত ইফতার অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, ‘আজকে নাকি বলা হয়েছে যে আগামী নির্বাচনে ইভিএমে ভোটগ্রহণ হবে না, ব্যালটে ভোটগ্রহণ হবে। এই বিষয়গুলোতে আমাদের একটুও আগ্রহ নেই।
‘আমরা পরিষ্কার করে বলেছি, জাতির যে সংকট সেই সংকট হচ্ছে নির্বাচনকালীন সরকারের। নির্বাচনকালীন কোন ধরনের সরকার থাকবে সেটা হচ্ছে প্রধান সংকট। এ কারণেই আমাদের গণতন্ত্র ধ্বংস হয়েছে, স্বাধীনতার মূল যে চেতনা ছিল, সেই চেতনা থেকে দেশ বহু দূরে সরে এসেছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা অনেকগুলো রাজনৈতিক দল একমত হয়েছি। আমরা একমত হয়ে যে কথাগুলো বলছি তা হচ্ছে- যারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়, গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না, তাদের অবশ্যই পদত্যাগ করতে হবে।
‘সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে, একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করবে, সেই নির্বাচন কমিশনের অধীনে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হবে।’
সারা দেশে শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা তৈরি হয়েছে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘শুধু বিএনপির কথা বলছি না, সাধারণ কোনো দলের কথাও বলছি না। আজ সাধারণ মানুষও নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে না।’
সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘অর্থনৈতিক উন্নয়নের ধুয়া তুলে জনগণকে বোকা বানিয়ে দুর্নীতির পাহাড় গড়ে তোলা হয়েছে। আজকে দুর্নীতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে বিদেশি পত্রিকাগুলোতেও একইভাবে সে বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে।’
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘এই রাষ্ট্রের কাঠামোগুলো ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে। আমরা সংবিধান, বিচারালয়, বিচার ব্যবস্থা, প্রশাসন পুনরায় গণতান্ত্রিক ও কল্যাণমূলক রাষ্ট্র নির্মাণের উপযোগী করে গড়ে তুলতে সংস্কারের কথা বলেছি এবং সেভাবেই আমরা কাজ করছি।’
তিনি বলেন, ‘এ দেশের জনগণ কখনই কোনো একনায়কতন্ত্র বা স্বৈরাচারকে মেনে নেয়নি। জনগণ তাদের অধিকারের জন্য, স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছে, সংগ্রাম করেছে এবং সফল হয়েছে।’
বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানির পরিচালনায় ইফতার অনুষ্ঠানে অংশ নেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, শাহজাহান ওমর, নিতাই রায় চৌধুরী, আলতাফ হোসেন চৌধুরী।
আরও অংশ নেন জাতীয় পার্টির আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মজিবুল হক চুন্নু, কাজী ফিরোজ রশিদ ও ফখরুল ইমাম, এলডিপির কর্নেল (অব.) অলি আহমদ, জেএসডির আ স ম আব্দুর রব, গণফোরাম নেতা মোস্তফা মোহসীন মন্টু, সুব্রত চৌধুরী, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না প্রমুখ।