চট্টগ্রাম শহরের কাছাকাছি পটিয়া বাইপাস সড়কে যাত্রীবাহী বাসে জন্ম নেয় এক শিশু। রোববার বিকেলে কক্সবাজারের চকোরিয়া থেকে চট্টগ্রাম যাচ্ছিলো বাসটি। বিকেল চারটার দিকে চট্টগ্রাম শহরের কাছাকাছি পটিয়া বাইপাস সড়কে পৌঁছাতেই হঠাৎ প্রসববেদনা শুরু হয় বাসযাত্রী ২৫ বছর বয়সী ওই নারীর নাম ইয়াছমিন আক্তারের।
সে সময় যাত্রীরা সবাই মিলে নিকটস্থ হাসপাতাল পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বাসটি নিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করেন চালককে। চালকও বাসটি নিয়ে যান সেখানে। কিন্তু সময় না থাকায় হাসপাতালে দায়িত্বরত মিডওয়াইফ সাদিয়া বেগম ও সানজিদা আক্তার সুপ্তার সাহায্যে বাসেই জন্ম হয় শিশুটির।স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় শিশুটির জন্ম হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের জুনিয়র কনসালট্যান্ট (গাইনী) কাজী ফারহানা নূর।
ইয়াসমিনের স্বামী শুক্কুর জানান, যাত্রীরা বাস থেকে নেমে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত কর্মকর্তাকে জানান। তৎক্ষনাৎ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসক ডা. সাদিয়া তারিন এবং মেডিক্যাল অফিসার তাহমিনা আক্তার প্রসূতীকে দেখেন। সেসময় দায়িত্বরত জুনিয়র কনসালট্যান্ট (গাইনী) ডা. কাজী ফারহানা নূরকে জানান।
তিনি বলেন, ‘ফারহানা নূর দেখে বুঝতে পারেন হাসপাতালে নেয়ার মত সময় হাতে নেই। তাই তৎক্ষনাৎ বাসেই ডেলিভারি করানোর সিদ্ধান্ত নেন। সে অনুযায়ী মিডওয়াইফ সাদিয়া বেগম ও সানজিদা আক্তার সুপ্তার সাহায্যে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় কন্যা সন্তান প্রসব করে আমার স্ত্রী। সারারাত হাসপাতালে পর্যবেক্ষণে সোমবার সকালে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেয়া হয়।’
তিনি আরও জানান, রোববার মূলত কক্সবাজারের চকোরিয়ায় তার স্ত্রীকে এক চিকিৎসকের কাছে নিয়ে এসেছিলেন। সেখানে চিকিৎসক কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু কক্সবাজার সদর হাসপাতালে না গিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য স্ত্রীকে সরাসরি চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
তিনি বলেন, ‘ব্যথা উঠার পর বাসের সবাই সহযোগিতা করেছেন। সবার কাছে কৃতজ্ঞ আমি। আর হাসপাতালে নেয়ার পর ডাক্তাররা অবস্থা দেখে বাসেই ডেলিভারি করিয়েছে। সবকিছু খুব সুন্দরভাবে হয়েছে।’
পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সব্যসাচী নাথ বলেন, ‘চারটার দিকে প্রসববেদনা শুরু হয়, ওনারা দ্রুত বাস সহ এখানে নিয়ে আসেন। যতটুকু জেনেছি, যাত্রীরাই মূলত বাসটি এখানে নিয়ে আসার জন্য চালককে অনুরোধ করেছিলেন। তো সেসময় দায়িত্বরত জুনিয়র কনসালট্যান্ট (গাইনী) ডা. কাজী ফারহানা নূর প্রসূতির অবস্থা বিবেচনা করে বাসেই ডেলিভারি করানোর সিদ্ধান্ত নেন। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে উনি একটি কন্যা সন্তান জন্ম দেন। বাচ্চা ও মা দুজনেই সুস্থ থাকায় সকালে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে।’