অনলাইন জুয়ায় হেরে ঋণ থেকে বাঁচতে 'খুন' হওয়ার নাটক সাজানোর অভিযোগ উঠেছে নাহিদ ইসলাম নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। ওই ব্যক্তিকে শনিবার সন্ধ্যায় নরসিংদী থেকে গ্রেপ্তার করে সিলেটের বিয়ানীবাজার থানা পুলিশ।
রোরবার দুপুরে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ সব তথ্য জানান সিলেটের পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল মামুন।
নাহিদ ইসলাম বিয়ানীবাজারের এক প্রবাসীর বাড়ির কেয়ারটেকার। তিন দিন আগে নিজের ঘর ও বিছানায় রক্তের মতো তরল পদার্থ ছিটিয়ে মধ্যরাতে হঠাৎ উধাও হয়ে যান তিনি। এনিয়ে এলাকার চাঞ্চল্য দেখা দেয়। তবে ৪০ ঘণ্টার মধ্যে এ ঘটনার রহস্য উন্মোচন করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ।
এনিয়ে সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, গত শুক্রবার ভোরে সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার মাথিউরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আমান উদ্দিন মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জানান, পূর্বপার গ্রামের মো. আব্দুল হেকিমের বাড়ির কেয়ারটেকার নাহিদ ইসলাম খুন হয়েছেন। তার ঘরভর্তি রক্ত।
খবর পেয়ে বিয়ানীবাজার থানার একটি দল দ্রুত ঘটনাস্থলে যায়। সেখানে বিছানা, ঘরের মেঝে এবং বারান্দায় রক্ত থাকলেও লাশ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
প্রাথমিকভাবে এটি হত্যাকাণ্ড মনে হওয়ায় এর রহস্য উদঘাটন ও ঘটনার সঙ্গে জড়িত আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য বিয়ানীবাজার থানার একটি গোয়েন্দা দল অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করে।
নাহিদ নিখোঁজ হওয়ার পর পুলিশের এ নিয়ে সন্দেহ হলে তার ঘর তল্লাশি করে একটি ডায়েরি পায়। যাতে অনেক দেনা-পাওনার হিসাব লিখে রেখেছিলেন তিনি। তল্লাশি করে তার ঘরে একটি বালতি ও মগে রং গুলিয়ে রাখার আলামত পাওয়া যায়।
পুলিশ সুপার জানান, নাহিদ প্রায় ১৪ বছর ধরে বিয়ানীবাজারের ওই এলাকায় আছেন। কিন্তু তার প্রকৃত পরিচয় কেউ জানতেন না।
পুলিশের ভাষ্য, নাহিদ কিশোরগঞ্জ থানার বড়ভিটা পূর্বপাড়া গ্রামের হোসেন আলীর ছেলে। তার প্রকৃত নাম তাজুল ইসলাম। নাহিদ তার গ্রামে অপরাধে জড়িয়ে পড়ে বিয়ানীবাজারে এসে আত্মগোপন করেন ।
আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, নাহিদ অনলাইন জুয়ায় আসক্ত ছিলেন। এতে তিনি অনেক টাকা ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন। তা থেকে বাঁচতে প্রথমে ভুয়া জাতীয় পরিচয় পত্র তৈরি করেন এবং পরে নিজে খুন হওয়ার নাটক সাজিয়ে আত্মগোপনে চলে যান। এ জন্য ক্যামিকেল দিয়ে তৈরি রক্তের মতো পদার্থ নিজ কক্ষে ফেলে যান নাহিদ।
নাহিদের বিরুদ্ধে তথ্য গোপন করে জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করার অভিযোগে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে বলে জানান সিলেটের পুলিশ সুপার।