হামলা-মামলার মধ্য দিয়ে সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতি নির্বাচন শেষ হলেও আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীদের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। শনিবার ছুটির দিনেও দু’পক্ষের অবস্থানে সরগরম হয়ে ওঠে সমিতি প্রাঙ্গণ।
এদিকে নতুন করে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করে গঠিত এডহক কমিটি প্রথম সভা করেছে শনিবার। কমিটি সমিতির সংবিধান অনুযায়ী ভোটার তালিকা প্রস্তুত করে ১৪ ও ১৫ জুন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ এবং সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করে নির্বাচিত কমিটির কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করবে।
এডহক কমিটি ব্যতীত সমিতির কোনো বিষয় নিয়ে অন্য কোনো কমিটিকে যাতে সাক্ষাৎ না দেয়া হয়, সেজন্য প্রধান বিচারপতির কাছে রোববার এডহক কমিটির নেতৃত্বে চিঠি দেয়া হবে। অন্য বিচারপতিদেরও চিঠি দেয়া হবে।
সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির কনফারেন্স রুমে এডহক কমিটির সিনিয়র সদস্য আলহাজ্ব গিয়াস উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সভা পরিচালনা করেন কমিটির সদস্য সচিব শাহ আহমেদ বাদল।
সভায় এডহক কমিটির সদস্য তৈমূর আলম খন্দকার, জগলুল হায়দার আফরিক, ড. রফিকুল ইসলাম মেহেদীসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। কমিটির আহ্বায়ক সিনিয়র অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ মহসিন রশিদ তার স্ত্রীর অসুস্থতার জন্য হাসপাতাল থেকে অনলাইনে সভায় যোগ দেন।
সভায় সিদ্ধান্ত হয়, সমিতির সব ব্যাংক হিসাব এডহক মিটির আহ্বায়ক মোহাম্মদ মহসিন রশিদ ও সদস্য সচিব শাহ্ আহমেদ বাদল এবং সিনিয়র সদস্য আলহাজ্ব গিয়াস উদ্দিনের মধ্যে দুইজনের যৌথ স্বাক্ষরে পরিচালিত হবে। এ বিষয়ে সব তফসিলি ও বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে চিঠি দেয়া হবে।
প্রসঙ্গত, বিশিষ্ট আইনজীবী ও সংবিধান প্রণয়ন কমিটির অন্যতম সদস্য ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলামের সভাপতিত্বে বৃহস্পতিবার তলবি সভা আহ্বান করে এই এডহক কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটির বিরুদ্ধে শনিবার প্রতিবাদ ও মতবিনিময় সভা করেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবীরা।
সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী ২ নম্বর হলে (উত্তর) বর্তমান নির্বাচিত সভাপতি মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির ও সম্পাদক আবদুন নুর দুলালের নেতৃত্বে নির্বাচিত সদস্য এবং আওয়ামী লীগ সমর্থক আইনজীবীরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় তারা এডহক কমিটিসহ বিএনপির আইনজীবীদের বিরুদ্ধে পাল্টা স্লোগান দেন। তারা জানান, রোববার সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটি গঠন করা হবে। এতে কেউ বাধা সৃষ্টি করলে প্রয়োজনে পাল্টা জবাব দেয়া হবে। পরে তারা সেখানে বিক্ষোভ মিছিল করেন।
অন্যদিকে বারের সাবেক সম্পাদক বিএনপি সমর্থিত ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম সুপ্রিমকোর্ট ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক গাজী কামরুল ইসলাম সজলের নেতৃত্বে বিএনপি সমর্থক আইনজীবীরা সমিতির সাবেক সভাপতি জয়নুল আবেদীনের কক্ষের সামনে অবস্থান নেন।
গত ১৫ ও ১৬ মার্চ হট্টগোল, হামলা, মামলা ও ভাঙচুরের মধ্য দিয়ে সুপ্রিমকোর্ট বারের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে ১৪টি পদের সবক’টিতে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্যানেল জয়ী হয়।