বরিশালে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের ৬ কর্মীকে কুপিয়ে জখমের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে।
তবে যে ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে তিনি জানান, ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দে কোপাকুপি করেছে কিশোর গ্যাং। এই ঘটনায় ধারালো দেশীয় অস্ত্র-দাসহ একজনকে আটকও করেছে পুলিশ।
বরিশাল নগরীর জীবনানন্দ দাশ সড়কের মল্লিকা কিন্ডারগার্টেনের সামনে বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
আহতদের বরিশাল শের ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ছাত্রলীগ কর্মী সিয়াম জানান, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সরকারি বরিশাল কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম টিপুর সঙ্গে ছাত্রলীগ কর্মী সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র এইচ এম রিশাদ মাহামুদের সঙ্গে দ্বন্দ ছিল দীর্ঘদিনের। রিশাদের সহচরীদের সরকারি বরিশাল কলেজে ছাত্রলীগের রাজনীতি করতে নিষেধ করছিলে টিপু।
কয়েকদিন আগে হৃদয় নামে এক ছাত্রলীগ-কর্মীকে মারধরও করেছিল টিপু। এসব নিয়ে দ্বন্দে টিপু তার দলবল নিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে রিশাদ সহ ৬ জনের উপর হামলা করে।
তিনি বলেন, ‘ধারালো অস্ত্রের আঘাতে রিশাদসহ ইউনিভার্সিটি অব গ্লোবাল ভিলেজের ইংরেজী বিভাগের ছাত্র, ছাত্রলীগ কর্মী আব্দুল্লাহ আল মারুফ, ইমন, সোহান, এভ্রিল ও খালিদও গুরুতর আহত হয়। তাদের উদ্ধার করে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’
বরিশাল শের ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সাহাদাৎ হোসেন বলেন, ‘আহতদের মধ্যে রিশাদ মাহামুদকে গুরুতর অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
সরকারি বরিশাল কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম টিপু বলেন, ‘কিশোর গ্যাং আব্বা গ্রুপের সদস্য রিশাদ। তার গ্রুপের সঙ্গে ছাত্রলীগেরই অপর একটি গ্রুপ কোপাকুপি হয়েছে বলে শুনেছি। রিশাদের সাথে যাদের কোপাকুপি হয়েছে তারা প্রভাবশালী হওয়ায় রিশাদের অনুসারীরা আমার নাম জড়াচ্ছে এই ঘটনায় শুধু শুধু। আমি কোনো কিছুই জানি না বা সম্পৃক্ত নই এই ঘটনায়।’
এদিকে প্রত্যক্ষদর্শী মল্লিক রোডের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাজ্জাদ সেরনিয়াবাতের অনুসারী মো: সাদ ও মহানগর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক রইজ আহম্মেদ মান্নার অনুসারী এইচ এম রিশাদ গ্রুপের সঙ্গে মারামারি হয় মল্লিকা কিন্ডারগার্টেনের পাশের রাস্তার মুখে বসে। ‘এক পর্যায়ে উভয় গ্রুপ ধারালো অস্ত্র নিয়ে কোপাকুপি করলে সাদ ও রিশাদসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়। রিশাদ গ্রুপ সাদের পিঠে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপ দিলে সে গুরুতর আহত হয় এবং স্থানীয়রা তাকে বরিশাল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করতে নিয়ে যায় এবং রিশাদ ও তার দলবলও আহত হলে তাদেরও হাসপাতালে নেয়া হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দাসহ একজনকে আটক করেছে।’
বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আমানউল্লাহ বারী বলেন, ‘স্থানীয় দ্বন্দ নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে ঝামেলা হয়েছে। আমরা নাজিম মাহমুদ রাফি নামে একজনকে ধারালো দাসহ আটক করেছি। এ ঘটনায় কোনো মামলা বা অভিযোগ হয়নি।’