পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্ক থেকে সদরঘাট ফুটওভার ব্রিজ পর্যন্ত হকারদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। চাঁদা না দিলে তাদেরকে নাজেহাল হতে হচ্ছে। এমনটা উল্লেখ করে চাঁদাবাজি ও নির্যাতন বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ হকার্স ইউনিয়ন।
এ বিষয়ে সংগঠনটির সভাপতি আব্দুল হাশিম কবির ও সাধারণ সম্পাদক হযরত আলী স্বাক্ষরিত একটি চিঠি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে বলে জানান হকার্স ইউনিয়নের নেতারা।
চিঠিতে বলা হয়েছে, পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্ক থেকে সদরঘাট ফুটওভার ব্রিজ পর্যন্ত এলাকায় রাস্তার পাশে ফুটপাতে কিংবা খালি জায়গায় হকারি করে শতাধিক লোক জীবিকা নির্বাহ করে। প্রতিদিন বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে ৫টায় এবং সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে ৭টায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গ্রুপ এবং সাধারণ সম্পাদক গ্রুপ পরিচয়ে পর্যায়ক্রমে দু’বার দল বেঁধে হকারদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে।
আরও বলা হয়েছে, কোনো হকার দাবিকৃত অংকের টাকা দিতে অপারগ হলে তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়। চার মাস ধরে চলে আসা এই চাঁদাবাজি ও শারীরিক নির্যাতনের বিষয়টি বহু জায়গায় জানানোর পরও প্রতিকার মেলেনি।
সংগঠনটির সভাপতি আব্দুল হাশিম কবির বৃহস্পতিবার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বেশ কিছুদিন আগে সদরঘাট এলাকায় আমরা একটি প্রোগ্রাম করতে যাই। সেখানে ওই এলাকার ভুক্তভোগী হকাররা আমাদেরকে বিষয়টি জানান। আমরা বিষয়টি চিঠির মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়কে জানিয়েছি।’
হকার্স ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ফিরোজ বলেন, ‘আমরা বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে একটি চিঠি জমা দিয়েছি। পরবর্তীতে আমরা ডিএমপি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েও চিঠি পাঠাব। এরপর তিন চারদিন অপেক্ষা করে দেখবো কী পদক্ষেপ নেয়া হয়। সমস্যার সমাধান না হলে পরবর্তী কর্মসূচি গ্রহণ করব।’
চাঁদাবাজির অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করে জবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজি বলেন, ‘কেউ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নাম ভাঙিয়ে চাঁদা তুললে তার দায়ভার তো আমরা নেব না। ক্যাম্পাসের আশপাশে আমাদের কোনো কর্মী চাঁদাবাজি করে না। আর ছাত্রলীগে চাঁদাবাজের কোনো জায়গা নেই।’
শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসাইন বলেন, ‘একটা অভিযোগ দিয়ে চিঠি দিয়ে দিলেই তো কোনো কিছু প্রমাণ হয়ে যায় না। চাঁদাবাজির কোনো ভিডিও, রেকর্ডিং তো নেই। তারা মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে শুধু ছাত্রলীগের সুনাম নষ্ট করতে চাচ্ছে। আর তারা আমাদের কারও চাঁদাবাজির প্রমাণ দিতে পারলে আমরা সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব।’