নওগাঁয় র্যাব হেফাজতে থাকা অবস্থায় মারা যাওয়া সুলতানা জেসমিনকে যে অভিযোগের মামলায় আটক করা হয়েছিল, ওই মামলার প্রধান আসামি আল-আমিনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
রাজধানীর শাহজাহানপুর থেকে মঙ্গলবার বিকেলে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছেন র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-৩-এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার ফারজানা হক।
তিনি জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আল-আমিন প্রতারক চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। চক্রটি রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে কর্মরত যুগ্ম সচিব মো. এনামুল হকের নাম পরিচয় ও ব্যবহার করে ভুয়া ফেসবুক আইডি থেকে চাকরিপ্রত্যাশী বেকার যুবকদের কাছ থেকে সরকারি চাকরি পাইয়ে দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে।
র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘সেই কর্মকর্তা বিষয়টি জানতে পারলে ২৩ মার্চ আল-আমিন ও তার সহযোগী সুলতানা জেসমিনসহ অজ্ঞাতনামা আরও দুই থেকে তিনজনকে আসামি করে রাজশাহীর রাজপাড়া থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন। পরবর্তী সময়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।’
র্যাব জানায়, আল-আমিন বিকাশ, নগদ ও মোবাইলে ফ্লেক্সিলোড ব্যবসায়ী। তিনি দীর্ঘদিন ধরে তার এই মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবসার সুযোগ নিয়ে প্রতারণামূলকভাবে সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের নাম, পদবি ব্যবহার করে চাকরিপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে অর্থ আত্মসাৎ সিন্ডিকেটের সঙ্গে কাজ করে আসছেন।
৪৫ বছর বয়সী সুলতানা জেসমিন নওগাঁ শহরের কালিতলা মহল্লার নওগাঁ পৌরসভা ও চন্ডিপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে অফিস সহকারী পদে চাকরি করতেন। শহরের জনকল্যাণ মহল্লার একটি ভাড়া বাসায় থেকে নিয়মিত অফিসে যাতায়াত করতেন তিনি।
গত ২২ মার্চ নওগাঁ শহরের মুক্তির মোড় এলাকা থেকে র্যাবের হাতে আটক হন জেসমিন। ২৪ মার্চ সকাল ৯টার দিকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
জেসমিনের মামা ও নওগাঁ পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর নাজমুল হক মন্টু বলেন, ‘আমার ভাগ্নিকে র্যাব আটকের পর বিভিন্ন জায়গায় খোঁজখবর নিতে থাকি। পরে জানতে পারি যে, সে নওগাঁ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সেখানে গিয়ে দেখি র্যাবের লোকজন তার চারপাশে। এর কিছুক্ষণ পর তাকে রাজশাহী হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে সে মারা যায়।’
জেসমিনের মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন উঠলে হাইকোর্ট তার ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনসহ যাবতীয় তথ্য তলব করে। একই সঙ্গে র্যাবের পক্ষ থেকেও বলা হয়েছে, বাহিনীর কেউ দায়ী থাকলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।