নরসিংদীর মনোহরদীতে ছাগল চুরির অভিযোগ উঠেছে ১৮ বছর বয়সী ছাদিকুল নামে এক কিশোরের বিরুদ্ধে। পরিবারের দাবি, মিথ্যা অপবাদ দিয়ে কিশোরকে না পেয়ে তার বাবা আঙ্গুর মিয়াকে বাড়ি থেকে তুলে নেয় চেয়ারম্যানের লোকেরা। পরে মঙ্গলবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ইউনিয়ন পরিষদে বন্দি করে নির্যাতন করা হয়।
রাত পৌনে ১টার দিকে নির্যাতিত আঙ্গুর মিয়াকে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বাড়িতে নিয়ে আসেন তার পরিবারের লোকজন। স্বজনদের অভিযোগ, আপোষের জন্য এক লাখ টাকা দাবি করেন চেয়ারম্যানের লোকজন।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার খিদিরপুর ইউনিয়ন পরিষদে। মঙ্গলবার রাতে ওই ইউনিয়ন পরিষদের সামনে সাংবাদিকদের কাছে এমন অভিযোগ করেন আটকে রাখা আঙ্গুরের স্ত্রী রিমা আক্তার।
এ বিষয়ে রাত পৌনে ১২টার দিকে আঙ্গুরের মেয়ে ময়না আক্তার নিউজবাংলাকে বলেছিলেন, ‘সকাল ১০টার দিকে খিদিরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের লোক পরিচয় দিয়ে নিজ বাড়ি থেকে তুলে নেয় বাবাকে। তারা দুই দফায় ১০/১২জন লোক আসে তাদের মধ্যে মামুন, সাদ্দাম, নাজমুল নামে তিনজনকে চিনেছি বাকিদের চেহারা চিনি নাম জানি না। সঙ্গে আমার মাকেও নিয়ে যায়। পরে মাকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। আমার ভাইকে নিয়ে গেলে বাবাকে ছাড়া হবে। ভাই কোথায় জানিনা। এখনো মা ইউনিয়ন পরিষদের সামনে আছে বাবা বন্দি পরিষদের ভেতরে। এ ঘটনার বিচারের জন্য আমরা সকালে পুলিশের কাছে যাব।
অভিযুক্ত খিদিরপুর ইউপি চেয়ারম্যান কাউছার হোসেন বিপ্লব নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাকে হেয় করতে অনেকে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে। মূল বিষয়টা হলো আমার এলাকা থেকে গরু-ছাগল চুরির হচ্ছে ঘনঘন। গত বৃহস্পতিবার আঙ্গুরের ছেলে ছাদিকুল ছাগল চুরি করে ধরা খেয়েছে কটিয়াদি গ্রামে।
‘আজ আমার পরিষদে বিচার আসে চরসবুদ্ধি, পাড়াতলা, চরআহম্মদপুর গ্রামে থেকে ছাগল চুরি হয়েছে। এর মধ্যে চুরি হওয়া ছাগলের মালিক সোহাগ মিয়া, মানিক মিয়া ও শাহজাহান মিয়া বলেন পাড়াতলা গ্রামে আঙ্গুরের ছেলে ছাদিকুল তা চুরি করে পালিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘পরে স্থানীয় লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে আঙ্গুরের বাড়িতে গিয়ে তার ছেলেকে না পেয়ে আঙ্গুর মিয়াকে জিঙ্গাসা করতে পরিষদে নিয়ে আসে। এ খবর বিকেলে ৫টার দিকে পেয়েছি। পরে পরিষদে এসে তাদের বলে যাই ইফতার, তারাবী নামাজ শেষে শালিসে বসব। এরপর আমি থানা পুলিশকে বিষয়টা অবগত করে রাত ১০টার দিকে পরিষদে আসি।’
ইউপি চেয়ারম্যানের দাবি, তার হুকুমে আঙ্গুরকে তুলে আনা হয় নাই। বরং তার আসতে দেরি হওয়ায় গ্রাম-পুলিশের পাহারায় আঙ্গুরকে আটকে রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘তাকে কোনো নির্যাতন করা হয় নাই। আর টাকা চাওয়ার কোনো প্রমাণ দেখাতে বলেন আঙ্গুরের স্ত্রীকে।’
এদিকে খিদিরপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান জামিলের নিউজবাংলাকে বলেন, গত তিনদিন আগে ছাগল চুরি হয়ে যায় চরআহম্মদপুর গ্রামে। এ ঘটনায় ছাদিকুলকে সন্দেহ করে চেয়ারম্যান বিপ্লবের কাছে লোকজন যায়। পরে সকাল ১০টার দিকে বিল্পবের লোকেরা সন্ত্রাসী কায়দায় ছাদিকুলের বাবা আঙ্গুরকে পরিষদে নিয়ে বন্দি করে রাখে।
এ বিষয়ে মনোহরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ফরিদ উদ্দিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রাত ১০টার দিকে চেয়ারম্যান বিল্পব আমাকে বিষয়টা জানান। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।’