বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

হেফাজতে জেসমিনের মৃত্যু ক্ষমতার অপব্যবহারের নিকৃষ্ট উদাহরণ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক   
  • ২৮ মার্চ, ২০২৩ ১৯:১৩

সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুকে মারাত্মক অপরাধ ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। একইসঙ্গে এ সংক্রান্ত অভিযোগের বিষয়টি পুলিশের অন্য কোনো ইউনিটের মাধ্যমে তদন্ত করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিবকে প্রতিবেদন দিতে বলেছে সংস্থাটি।

নওগাঁয় র‍্যাব হেফাজতে নারীর মৃত্যুর ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে দেশে মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলো। তারা বলেছে, এ ঘটনা বিদ্যমান আইনের লঙ্ঘন এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের নিকৃষ্ট উদাহরণ।

মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা বেশ কয়েকটি সংগঠন সোমবার ও মঙ্গলবার পৃথক বিবৃতিতে এমন বক্তব্য তুলে ধরেছে। তারা যথাযথ আইনানুগ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে ন্যায়বিচারের দাবি জানিয়েছে।

সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুকে মারাত্মক অপরাধ ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। একইসঙ্গে এ সংক্রান্ত অভিযোগের বিষয়টি পুলিশের অন্য কোনো ইউনিটের মাধ্যমে তদন্ত করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিবকে বিস্তারিত প্রতিবেদন দিতে বলেছে সংস্থাটি।

সোমবার রাতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের উপ-পরিচালক ফারহানা সাঈদ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিবৃতিতে র‌্যাব হেফাজতে নারীর মৃত্যুর ঘটনাকে মারাত্মক অপরাধ ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন বলে অভিহিত করা হয়। একইসঙ্গে এ সংক্রান্ত অভিযোগের বিষয়টি পুলিশের অন্য কোনো ইউনিটের মাধ্যমে তদন্ত করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিবকে বিস্তারিত প্রতিবেদন দিতে বলেছে কমিশন।

মানবাধিকার কমিশনের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘গণমাধ্যমে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক এফএম শামীম আহাম্মদ কর্তৃক ‘র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদের সময় ওই নারী পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত পান’ সংক্রান্ত প্রকাশিত বক্তব্য দায়িত্বজ্ঞানহীন ও অনভিপ্রেত।

‘র‍্যাবের জিজ্ঞাসাবাদকালে পড়ে গিয়ে আঘাত পাওয়া এবং মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে মৃত্যুর ঘটনা অস্বাভাবিক প্রতীয়মান হয়। এটা যথেষ্ট সন্দেহের উদ্রেক করে। এ অবস্থায় হেফাজতে মৃত্যু সংক্রান্ত বর্ণিত অভিযোগের বিষয়টি র‌্যাব বাদে পুলিশের অন্য কোনো ইউনিটের মাধ্যমে তদন্ত করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিবকে বিস্তারিত প্রতিবেদন পাঠাতে বলা হয়েছে।’

র‌্যাব হেফাজতে সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর ঘটনায় ২০টি মানবাধিকার সংগঠনের জোট হিউম্যান রাইটস ফোরাম বাংলাদেশ (এইচআরএফবি) প্রতিবাদ জানিয়েছে। তারা বিবৃতি দিয়ে বলেছে, ‘পরিবারের পক্ষ থেকে উত্থাপিত অভিযোগ যথাযথ আইনানুগ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে খতিয়ে দেখে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা দরকার। একইসঙ্গে মামলা দায়েরের আগে আটক, বেআইনি জিজ্ঞাসাবাদ ও পুলিশকে না জানানোর ঘটনা সংবিধান, মানবাধিকারের মূল নীতি, উচ্চ আদালতের নির্দেশনা ও বিদ্যমান আইনের লঙ্ঘন। এটি ক্ষমতার অপব্যবহারের নিকৃষ্ট উদাহরণ।’

এইচআরএফবির দাবি, তদন্ত চলাকালে অভিযুক্ত র‌্যাব কর্মকর্তাদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিতে হবে, যাতে তারা তদন্তকে কোনোভাবে প্রভাবিত করতে না পারেন।

সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর ঘটনায় উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। সংগঠনটির সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম ও সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু এক বিবৃতিতে বলেন, মেডিক্যাল পরীক্ষায় দেখা গেছে যে মাথায় আঘাত ও মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের কারণে সুলতানার মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তসাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছে পরিষদ।’

মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) বিবৃতিতে বলেছে, ‘সুলতানা জেসমিনের পরিবারের অভিযোগ গুরুতর। তবে এবারই নয়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রায়ই নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যুর অভিযোগ উঠছে। আগের ঘটনাগুলোর আইনগত প্রতিকার না পাওয়া ও বিচার না হওয়ায় এসব ঘটনা ঠেকানো যাচ্ছে না।’

মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের (এমএসএফ) প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সুলতানা কামাল ঘটনাটির সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত নিশ্চিত করে নির্যাতনের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান।

প্রসঙ্গত, বুধবার (২২ মার্চ) নওগাঁ শহর থেকে সুলতানা জেসমিনকে আটক করা হয়। প্রতারণার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে আটক করা হয়েছে বলে র‌্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়। আটকের পর মস্তিষ্কে গুরুতর রক্তক্ষরণে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। শুক্রবার সকালে রাজশাহী মেডিক‍্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সুলতানা জেসমিন মারা যান বলে র‌্যাব দাবি করেছে।

তবে স্বজনদের অভিযোগ, র‍্যাব হেফাজতে নির্যাতনের কারণে সুলতানা জেসমিনের মৃত্যু হয়েছে।

এ বিভাগের আরো খবর