বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

এক্সপ্রেসওয়েতে দুর্ঘটনার যেসব কারণ জানানো হলো প্রতিবেদনে

  • প্রতিনিধি,মাদারীপুর   
  • ২২ মার্চ, ২০২৩ ১৬:০২

মাদারীপুর জেলা প্রশাসনের গঠিত তদন্ত প্রতিবেদনে বুধবার দুপুর ১২টার দিকে এসব তথ্য তুলে ধরেন তদন্ত কমিটির প্রধান পল্লব কুমার হাজরা। এ সময় ওই এক্সপ্রেসওয়ে দুঘর্টনা রোধে ১৪টি সুপারিশও তুলে ধরা হয়।

অবশেষে তদন্ত প্রতিবেদনে বেরিয়ে এলো মাদারীপুরের শিবচরে পদ্মা সেতুর এক্সপ্রেসওয়েতে ভয়াবহ দুর্ঘটনার মূল কারণ। সেখানে বলা হয়েছে, ইমাদ পরিবহনটি মেয়াদোত্তীর্ণ, চালকের মধ্যম যান চলাচলের লাইসেন্স থাকলেও চালিয়েছে ভারী যানবাহন। বৃষ্টিভেজা সড়কে বেপারোয়া গতিতে গাড়ি চালানোই দুর্ঘটনার কারণ।

মাদারীপুর জেলা প্রশাসনের গঠিত তদন্ত প্রতিবেদনে বুধবার দুপুর ১২টার দিকে এসব তথ্য তুলে ধরেন তদন্ত কমিটির প্রধান পল্লব কুমার হাজরা। এ সময় ওই এক্সপ্রেসওয়ে দুঘর্টনা রোধে ১৪টি সুপারিশও তুলে ধরা হয়।

তবে কাগজে-কলমেই তদন্ত প্রতিবেদন না রেখে বাস্তবায়নের দাবি যাত্রী-চালকদের। আর প্রশাসনও দুঘর্টনারোধে কঠোর ভূমিকার আশ্বাস দিচ্ছেন।

তদন্ত কমিটির প্রধান ও মাদারীপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট পল্লব কুমার হাজরা বলেন, ‘বেপরোয়া গতির কারণে গত বছরের ১৭ নভেম্বর ইমাদ পরিবহনটির রেজিস্ট্রেশন স্থগিত করেন গোপালগঞ্জ বিআরটিএ অফিস। শুধু তাই নয়, পরিবহনটির মেয়াদোত্তীর্ণ হয় এ বছরের ১৮ জানুয়ারি। তারপরেও সদর্পে চলছিল ইমাদ পরিবহন। এ কারণে গত ১৯ মার্চ সকাল ৮টায় মাদারীপুরের কুতুবপুরে এক্সপ্রেসওয়েতে ঘটে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা।

‘এ ছাড়া চালকের পেশাদার লাইসেন্স মধ্যম থাকলেও চালিয়েছেন ভারী যান। অন্যদিকে দুঘর্টনার দিন বৃষ্টিভেজা রাস্তা থাকার কারণে চালকের অসচেতনার কারণে দুঘর্টনা ঘটেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সড়কে মৃত্যুর মিছিল কমাতে তদন্ত প্রতিবেদনে ১৪টি সুপারিশ দেয়া হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে, চালক ও সংশ্লিষ্ট সকলের লাইসেন্স এবং একটি গাড়ির সকল বৈধ কাগজপত্র নিশ্চিত করে মহাসড়কে গাড়ি চালানো নিশ্চিত করতে হবে, এক্সপ্রেসওয়েতে চলাচলকারী দ্রুতগতিসম্পূর্ণ গাড়ির চালক ও যাত্রীদের সিটবেল্ট পরিধান করতে হবে, গাড়ির ইন্টেরিয়র নরম বস্তু দিয়ে করা, এক্সপ্রেসওয়ের উভয় পাশে গার্ড রেইল স্থাপন করতে হবে। এই রাস্তায় কমপক্ষে তিন লেন ব্যবস্থা রাখা জরুরি। এ ছাড়াও মহাসড়কে চলাচলকারী সকল পরিবহনের হালনাগাদ তথ্য সম্বলিত ডেটাবেইজ রাখতে হবে।’

মাদারীপুর জেলা প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটির আরেক সদস্য ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মনিরুজ্জামান ফকির বলেন, ‘এক্সপ্রেসওয়েতে চলাচলকারী গাড়ির গতিসীমা নিয়ন্ত্রণের জন্যে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কার্যক্রম বৃদ্ধির জন্যে লোকবল ও টহল গাড়ি আধুনিক যন্ত্রপাতি নিশ্চিত করতে হবে। দিনের নির্দিষ্ট সময়ে বিশেষ করে রাতে, ভোরে, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় গাড়ির গতি অপেক্ষাকৃত কম রাখতে হবে। দুঘর্টনা কমাতে সড়ক ও মহাসড়কের সিটি টিভি, ট্র্যাকার, অনলইন মনিটরিং জোরদার করতে হবে।’

তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক হলেন মাদারীপুর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিএম) পল্লব কুমার হাজরা, কমিটির সদস্য মাদারীপুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মনিরুজ্জামান ফকির, বুয়েটের সহকারী অধ্যাপক শাহনেওয়াজ হাসানাত-ই-রাব্বি, মাদারীপুর বিআরটিএর সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নুরুল হোসেন।

গত রোববার ভোর ৪টার দিকে খুলনার ফুলতলা থেকে ইমাদ পরিবহনের একটি বাস ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে। পরে ভোর ৫টা ৫ মিনিটে খুলনার সোনাডাঙ্গা থেকে বাসটি যাত্রী নিয়ে ঢাকার দিকে রওনা হয়। বাসটির চালক সকাল সাড়ে ৭টার দিকে পদ্মা সেতুর আগে এক্সপ্রেসওয়ের কুতুবপুর এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারায়। এতে বাসটি ছিটকে পড়ে যায়।

এরপর এক্সপ্রেসওয়ের আন্ডারপাসের দেয়ালের সঙ্গে সজোড়ে ধাক্কা লেগে দুমড়েমুচড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই চালক জাহিদ হাসান, তার সহকারী ইউসূফসহ ১৭ জনের মৃত্যু হয়। চিকিৎসার জন্য ১২ জনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে বাসটির সুপারভাইজার মিনহাজসহ আরও এক যাত্রীর মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় শিবচর হাইওয়ে থানার সার্জেন্ট জয়ন্ত সরকার বাদী হয়ে ইমাদ পরিবহন লিমিটেড কোম্পানির মালিক ও সংশ্লিষ্ট সকলের নামে একটি মামলাটি করেছেন।

এ বিভাগের আরো খবর