বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন থেকে স্বাধীনতা যুদ্ধ, ধানমন্ডি সুধাসদনের সিঁড়িতে বঙ্গবন্ধুর মরদেহ, ৯০ পরবর্তী স্বৈরশাসন- এসব মিলিয়ে একটি দেয়ালে ফুটে উঠেছে সমগ্র বাংলাদেশের ইতিহাসের চিত্র।
কুমিল্লা সরকারি কলেজে প্রবেশের পূর্বে দেয়ালজুড়ে এমন নান্দনিক চিত্রকর্ম বেশ ইতিবাচক সাড়া ফেলেছে। কলেজ শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দারাও অবসরে চিত্রকর্ম দেখছেন আগ্রহ নিয়ে।
কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী নুসাইবা বলেন, ‘আমাদের পাঠ্য বইতে দেশের যে ইতিহাস জেনেছি কলেজে প্রবেশের পূর্বে তার চিত্রায়ণ সত্যি ভালো লেগেছে। মনে হচ্ছে সব যে ঠিক চোখের সামনে। এই আয়োজনটা অনেক ভালো লেগেছে।’
দেয়ালে এমন চিত্রকর্মের নাম দেয়া হয়েছে বাংলাদেশের জন্মকথা। কুমিল্লা সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের উদ্যোগেই এই চিত্রকর্ম আঁকা হয়েছে।
কলেজ ছাত্রলীগের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সুলতান আহমেদ সাকিব ও যুগ্ম আহ্বায়ক রাব্বি হোসেন মিঠু বলেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাসের সঙ্গে ছাত্রলীগের ইতিহাস জড়িয়ে আছে। আমরা চেষ্টা করেছি সেই ইতিহাসকে এই প্রজন্মের সামনে তুলে ধরতে। নিজস্ব খরচে এই চিত্রকর্ম তৈরি করেছি। কারণ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। আমরা সেই ছাত্রলীগের প্রতিনিধিত্ব করছি।’
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন জাগ্রত মানবিকতার প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ডা. তাহসিন বাহার সূচনা বলেন, ‘নিঃসন্দেহে কুমিল্লা সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের এটি একটি প্রশংসনীয় কাজ।’
দেয়ালজুড়ে ইতিহাসের চিত্রায়ণ করেন শিল্পী জোনায়েদ মোস্তফা ও তার স্ত্রী জানবী তীনা।
শিল্পী জোনায়েদ মোস্তফা বলেন, ‘৫২ এর ভাষা আন্দোলনের আগে আমাদের মুখের ভাষা কেড়ে নিতে চেয়েছিল পাকিস্তানিরা । তাই চিত্রকর্মের শুরুতে একজন মানুষের মুখয়ব এঁকেছি। যার মুখ সেলাই করা। তারপর ভাষা আন্দোলন, শহীদ মিনার, ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, ৭০ এর নির্বাচন এবং ৭১ সালের স্বাধীনতাযুদ্ধ, স্বাধীনতা পরবর্তী বঙ্গবন্ধুকে হত্যা, ৯০ এর স্বৈরশাসন এক দেয়ালে সবই তুলে ধরেছি।’
শিল্পী জোনায়েদ মোস্তফার স্ত্রী জানভী তীনা বলেন, ‘এই চিত্রকর্মটি দেয়ালে আঁকতে আমরা স্বামী-স্ত্রীর অন্তত ৭২ ঘণ্টা সময় ব্যয় হয়েছে। আমরা এই কাজটির জন্য কোনো পারিশ্রমিক গ্রহণ করিনি।’