নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে আবুল কাশেম নামে এক বৃদ্ধের গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহতের স্ত্রী রমিজা বেগমের দাবি, র্যাব পরিচয়ে সাদা পোশাকধারী একদল লোক তার স্বামীকে গুলি করে মেরেছে।
উপজেলার সাদিপুর ইউনিয়নের বরগাঁও এলাকায় শুক্রবার মধ্যরাতে এ ঘটনা ঘটে। সে সময় হুমায়ুন কবির নামে আরেক ব্যক্তি আহত হয়েছেন।
নিহত আবুল কাশেম ওই এলাকার প্রয়াত কদম আলীর ছেলে। পেশায় একজন বাঁশ-বেতের হস্তশিল্পী। তার পাঁচ ছেলে ও এক মেয়ে সন্তান রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, গভীর রাতে গুলির শব্দ শুনে এলাকার লোকজন ছুটে গিয়ে দেখে সাদা পোশাকধারী একদল লোকের গুলিতে আহত অবস্থায় পড়ে আছেন আবুল কাসেম। পাশেই কাঁদছেন তার স্ত্রী। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়।
রমিজা বেগম জানান, রাত ২টার একটু আগে তার স্বামী প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে ঘরের বাইরে বের হন। এ সময় বাড়ির পাশেই চিৎকার চেঁচামেচির শব্দ শুনে তিনি এগিয়ে যান। সেখানে গিয়ে তিনি দেখেন শার্ট ও গেঞ্জি পরিচিত একদল লোক সেলিম নামে তাদের প্রতিবেশীকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। আর তৈরি পোশাক কারখানার এই কর্মী কান্নাকাটি করছেন।
বৃদ্ধ আবুল কাশেম ওই ব্যক্তিদের পরিচয় জানতে চাইলে সাদা পোশাকধারীরা বৃদ্ধকে লাঠি দিয়ে আঘাত করে সেখান থেকে চলে যেতে বলে। তবে বৃদ্ধ চলে যাননি।
রমিজা বেগম বলেন, ‘ওই সময় সাদা পোশাকধারীদের একজন বলে আমরা র্যাব। তারপর আমার স্বামীর পেটে গুলি করে। পরে তারা সেলিমকে ধরে নিয়ে চলে যায়। আমার চিৎকার শুনে লোকজন আইসা রক্তাক্ত অবস্থায় স্বামীকে উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু হাসপাতালে নেয়ার পরে ডাক্তার কয় মইরা গেছে। পুরা ঘটনা আমার চোখের সামনে হয়েছে।’
সোনারগাঁ উপজেলা হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘রাত ৩টার দিকে গুলিবিদ্ধ এক বৃদ্ধকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। পরে পরীক্ষা করে জানা যায় তিনি আগেই মারা গেছেন। নিহতের নাভির উপরে একটি বুলেটের চিহ্ন রয়েছে। মরদেহ পুলিশ মর্গে পাঠিয়েছে।’
সোনারগাঁ থানার পুলিশ পরির্দশক আহসান উল্লাহ বলেন, ‘হাসপাতাল থেকে এক বৃদ্ধের গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। তবে তিনি কিভাবে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন তা জানা যায়নি। ঘটনা তদন্ত করা হচ্ছে।’
এ বিষয়ে র্যাব-১১ এর অধিনায়ক ল্যাফটেন্যান্ট কর্নেল তানভীর মাহমুদ পাশা মোবাইল ফোনে বলেন, ‘শনিবার সকালে আমরা জানতে পারি যে একজন মারা গেছেন। তবে তিনি কিভাবে মারা গেছেন তা আমরা নিশ্চিত নই।’