ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ১১ কোটি ২৫ লাখ টাকা লুটের অন্যতম পরিকল্পনাকারী সোহেল রানাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ জানিয়েছে, ওই ব্যক্তি অর্থ বহনকারী প্রতিষ্ঠান মানি প্ল্যান্ট লিংক প্রাইভেট লিমিটেডে একসময় চালক হিসেবে কাজ করতেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) শুক্রবার সাভারের হেমায়েতপুর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।
ডিবির ভাষ্য, সোহেলের কাছ থেকে সাড়ে ৮৭ লাখ টাকা ও ডাকাতির টাকায় কেনা একটি নোয়াহ মাইক্রোবাস উদ্ধার করা হয়। এ নিয়ে ডাকাতির ঘটনায় ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ডিএমপি ডিবির প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ জানান, এ নিয়ে চার দফায় উদ্ধার করা হয় ৭ কোটি ৮৯ লাখ ৬ হাজার টাকা এবং ২০ লাখ টাকা মূল্যের নোয়াহ মাইক্রোবাস।
তিনি বলেন, ‘এই ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারীদের অন্যতম (সোহেল রানা)। তিনি একসময় মানি প্ল্যান্ট লিংক লিমিটেডের ড্রাইভার ছিলেন। ড্রাইভার থাকার কারণে তিনি মানি প্ল্যান্ট লিংক লিমিটেডের খুঁটিনাটি বিষয়াদি সম্পর্কে অবগত ছিলেন।
‘মানি প্ল্যান্ট লিংক লিমিটেডে ড্রাইভার থাকাকালীন তিনি লুটকৃত গাড়ির নকল চাবিও বানিয়েছিলেন। তার কাছ থেকে মানি প্ল্যান্ট লিংক লিমিটেডের একটি আইডি কার্ডও উদ্ধার করা হয়।’
ডিবির তথ্য অনুযায়ী, ঘটনার দিন ৩ কোটি ৮৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা উদ্ধার হলেও কোনো গ্রেপ্তার ছিল না। ১১ মার্চ ২ কোটি ৫৩ লাখ ৯৯ হাজার টাকা উদ্ধার ও আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
১৪ মার্চ ৫৮ লাখ ৭ হাজার টাকাসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি। সর্বশেষ ১৭ মার্চ ৮৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও ২০ লাখ টাকা মূল্যের মাইক্রোবাসসহ একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ডিএমপি ডিবির প্রধান জানান, মানি প্ল্যান্টের দাবি অনুযায়ী সোয়া ১১ কোটি টাকা লুট হয়। এর মধ্য থেকে উদ্ধার হয়েছে ৭ কোটি ৮৯ লাখ ৬ হাজার টাকা ও একটি মাইক্রোবাস। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার আকাশ লুটের টাকা থেকে ২০ লাখে মাইক্রোটি কিনে বলে ডিবিকে জানান।
কী হয়েছিল
রাজধানীর উত্তরায় গত ৯ মার্চ সকালে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বেসরকারি ডাচ-বাংলা ব্যাংকের টাকাবাহী একটি গাড়িতে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে বলে জানায় পুলিশ।
সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ঘটা ওই ঘটনায় ১১ কোটি ২৫ লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় বলে কর্তৃপক্ষের বরাতে জানান তুরাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মওদুদ হাওলাদার।
তুরাগ থানার এক কর্মকর্তা জানান, উত্তরার দিয়াবাড়ীর ১৬ নম্বর সেক্টরে ব্রিজের কাছে একটি গাড়ি থেকে ট্রাংকভর্তি ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ১১ কোটি ২৫ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয় অজ্ঞাত অস্ত্রধারীরা। মাইক্রোবাসটি মিরপুর ডিওএইচএস থেকে আশুলিয়ার দিকে যাচ্ছিল।
তিনি জানান, ডাচ-বাংলার টাকা মানি প্ল্যান্ট সিকিউরিটি কোম্পানি নামে একটি প্রতিষ্ঠানের পাঁচজন কর্মী নিয়ে যাচ্ছিলেন। পথে কালো রঙের একটি হাই-এইস মাইক্রোবাসে ৮ থেকে ১০ অস্ত্রধারী টাকা বহন করা মাইক্রোবাসটি থামিয়ে টাকা লুট করে নিয়ে যায়।