বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

দুবাইয়ে খুনের আসামির বিষয়ে সাকিবকে কোন মাধ্যমে জানিয়েছিল পুলিশ

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ১৮ মার্চ, ২০২৩ ০৯:২০

হারুন অর রশীদের একটি বক্তব্যের মাঝে খালেদ মুহিউদ্দীন তার উদ্দেশে বলেন, ‘জনাব হারুন অর রশীদ, আপনি সরাসরি জানান নাই কেন?’ উত্তরে ডিএমপি ডিবির প্রধান বলেন, ‘আমি তাকে কীভাবে জানাব? আমি তার প্রিয় লোকজনের মাধ্যমে তাকে জানিয়েছি?’

সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে অবস্থানরত খুনের মামলার আসামি আরাব খানের বিষয়ে সাকিবকে আগে থেকেই বলা হয়েছিল দাবি করে কোন মাধ্যমে ক্রিকেটারকে বিষয়টি অবহিত করা হয়, তাও জানিয়েছে পুলিশ।

ডয়চে ভেলে বাংলা বিভাগের ‘খালেদ মুহিউদ্দীন জানতে চায়’ নামের প্রশ্নোত্তরভিত্তিক অনুষ্ঠানে এমন তথ্য জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার প্রধান (ডিবি) হারুন অর রশীদ।

বাংলাদেশ সময় শুক্রবার রাতে প্রচারিত অনুষ্ঠানটিতে উপস্থাপক খালেদ মুহিউদ্দীন ডিএমপি ডিবিপ্রধানের উদ্দেশে বলেন, ‘আমার একটা স্পেসিফিক প্রশ্ন আছে। এই ঘটনা (খুনের আসামির দাওয়াতে সাকিবসহ তারকাদের দুবাই গমন) পত্রপত্রিকায় জানাজানি হওয়ার পর আপনাকে উদ্ধৃত করে পত্রপত্রিকায় লেখা হয়েছে, সাকিব আল হাসান জানা সত্ত্বেও দুবাইতে গিয়েছেন বা আপনারা সাকিব আল হাসানকে জানানোর পরও তিনি দুবাইতে গিয়েছেন। আপনারা সাকিব আল হাসানকে কীভাবে জানিয়েছেন যে, এইখানে যায়েন না? এইটা...মানে এইটা কী রকম?’

জবাবে ডিএমপি ডিবির প্রধান বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন সূত্রের মাধ্যমে তাকে জানিয়েছি। সে বিষয়টা জেনেছেও। পাশাপাশি আপনি বলেছেন, তিন দিন যাবত সারা বাংলাদেশের ফেসবুক, টুইটার থেকে শুরু করে, ইউটিউব থেকে শুরু করে তোলপাড়।’

জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তার এ বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে পাল্টা প্রশ্ন করে খালেদ মুহিউদ্দীন বলেন, “জবাব হারুন অর রশীদ, ফেসবুক তোলপাড় হোক। আমি জানতে চাইছি যে, আপনি এখানে বলেছেন, আপনাকে আমি উদ্ধৃত করছি, ‘তারা সেখানে হাজির হয়েছেন এবং জানার পরও, মানে আমরা তাদরকে অবগত করার পর, আপনি সাকিব আল হাসানকে উদ্দেশ করে বলেছেন, আমরা তাদেরকে অবগত করার পরও তারা দুবাই গিয়ে আরাব খানের…।’ আপনারা কি জানিয়েছেন? মানে তাকে জানিয়েছেন কি না?”

জবাবে হারুন অর রশীদ বলেন, ‘আমরা তাদেরকে বিভিন্ন সোর্সের মাধ্যমে জানিয়েছি এবং তারা অবগত হয়েছে। অবগত হওয়ার পরেও…।’

হারুন অর রশীদের ওই বক্তব্যের মাঝেই খালেদ মুহিউদ্দীন তার উদ্দেশে বলেন, ‘জনাব হারুন অর রশীদ, আপনি সরাসরি জানান নাই কেন?’

উত্তরে ডিএমপি ডিবির প্রধান বলেন, ‘আমি তাকে কীভাবে জানাব? আমি তার প্রিয় লোকজনের মাধ্যমে তাকে জানিয়েছি?’

এরপর পাল্ট প্রশ্ন করে খালেদ মুহিউদ্দীন বলেন, ‘কেন? মানে সরাসরি না কেন? আপনার অফিস কেন সরাসরি জানায় নাই?’

জবাবে হারুন অর রশীদ বলেন, ‘আপনি যে কথাটা বলছেন, সে দুবাই যাবে। সেখানে সে অ্যাড দিচ্ছে। আমি তার সোর্সের মাধ্যমে তাকে জানিয়েছি। তারপরও সে গিয়েছি। আমি সেটাকে বলছি, সে যে গিয়েছে, সেটাকে আমরা এক ধরনের নৈতিকতার…অপরাধ মনে করছি।’

রবিউল ওরফে আরাব দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর সম্প্রতি আলোচনায় আসেন বিশ্বের এক নম্বর অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানকে দিয়ে দুবাইয়ে তার শোরুম উদ্বোধনের ঘোষণার মধ্য দিয়ে। কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিরো আলমকেও সে দেশে নেয়ার আমন্ত্রণ জানান তিনি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘোষণাটি ছড়িয়ে যাওয়ার পর নড়েচড়ে বসেন গোয়েন্দারা। দীর্ঘদিন ধরে যাকে খোঁজা হচ্ছিল তিনি দুবাইয়ে কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করে ‘আরাব জুয়েলার্স’ নামে সোনার দোকান দিতে যাচ্ছেন; কিনেছেন বাড়ি-গাড়ি।

গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, রবিউল ২০১৮ সালে পুলিশ পরিদর্শক মামুন এমরান খাঁন হত্যা মামলার ফেরারি আসামি। ২০২০ সালে তিনি দেশ থেকে ভারতে পালিয়ে গিয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে সেখানকার পাসপোর্ট গ্রহণ করেন, যাতে নাম দেন আরাব খান। ‍

পুলিশ জানায়, একই বছরে রবিউল প্রলোভনের ফাঁদে ফেলে চাঁদপুরের যুবক আবু ইউসুফকে আদালতে আত্মসমর্পণ করান। ইউসুফ পরিচয় গোপন করে আদালতে নিজেকে রবিউল ইসলাম বলে পরিচয় দিয়ে আত্মসমর্পণ করে জামিন চান।

আদালত জামিন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়। কারাগারে থাকা অবস্থায় ইউসুফ তার নিজের পরিচয় ফাঁস করে দেন। ডিএমপি ডিবির তদন্তেও বিষয়টি উঠে আসে।

পরিচয়ের স্বপক্ষে যথাযথ কাগজ আদালতে উপস্থাপনের মাধ্যমে হত্যা মামলা থেকে দায়মুক্তি পান ইউসুফ, তবে রবিউলের হয়ে আদালতে আত্মসমর্পণ করায় তার নামে আরও দুটি মামলা হয়, যা চলমান।

ডিএমপি ডিবি সূত্রে জানা যায়, একপর্যায়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া রবিউল নাম পরিবর্তন করে হয়ে যান আরাব খান, বাগিয়ে নেন ভারতের পাসপোর্ট। ২০২১ সালে পেয়ে যান সংযুক্ত আরব আমিরাতে থাকার অনুমতি। বছর ঘুরতে না ঘুরতে বুর্জ খলিফার ৬৫ তলায় ফাউন্টেইন ভিউ ফ্ল্যাটের মালিক হয়ে যান আরাব।

এরই মধ্যে ঘোষণা আসে, উদ্বোধন হতে যাচ্ছে আরাবের গোল্ড জুয়েলারি শপ ‘আরাব জুয়েলার্স’। শপটির লোগো বানানো হয় ৬০ কেজি স্বর্ণ দিয়ে।

জুয়েলারি শপটি উদ্বোধনের জন্য সাকিব আল হাসানকে সেখানে যেতে দেখা যায়। তার পাশাপাশি দেশি-বিদেশি তারকাদের উপস্থিতিতে উদ্বোধন হয় জুয়েলারি শপটি।

এ বিভাগের আরো খবর