দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঠিক কত আসনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করা সম্ভব হবে, সে সিদ্ধান্ত এখনও ঝুলে আছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থছাড়ের অপেক্ষায়।
ইভিএম প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ মেশিন ট্যুলস ফ্যাক্টরি (বিএমটিএফ) ১ লাখ ১০ হাজার ইভিএম মেরামতে ১ হাজার ২৬০ কোটি টাকা চেয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থছাড় না করলে ইভিএম মেরামত সম্ভব হবে না।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে বুধবার কমিশন সভা শেষে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব জাহাংগীর আলম এসব তথ্য জানান।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে সর্বোচ্চ ১৫০ আসনে ইভিএম ব্যবহারের ঘোষণা দিয়েছিল কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিশন। সে লক্ষ্যে সাড়ে আট হাজার কোটি টাকার বেশি একটি প্রকল্প নিয়েছিল তারা, তবে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দাবস্থার মধ্যে প্রকল্প স্থগিত হওয়ায় বিদায়ী নূরুল হুদা কমিশনের ইভিএমই ছিল শেষ ভরসা।
বিদায়ী নূরুল হুদা কমিশন দেড় লাখ ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) কিনেছিল। তার মধ্যে ৪০ হাজার মেশিন এখন ব্যবহারের অনুপযোগী। বাকি ১ লাখ ১০ হাজার মেশিনও মেরামত করতে হবে।
ইসি সচিব জাহাংগীর আলম বলেন, ‘কমিশনের ১৬তম সভায় পাঁচটি আলোচ্য বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। প্রথম আলোচ্য বিষয় ছিল আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন ব্যবহার সংক্রান্ত একটি আলোচনা। আমরা মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী ১ লাখ ১০ হাজার মেশিন মেরামত করে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যবহার করতে আপ্রাণ চেষ্টা করব।
‘এ ক্ষেত্রে অর্থ মন্ত্রণালয়ে অর্থ প্রাপ্তির সাপেক্ষে আমরা সেটা চূড়ান্ত করতে পারব। কমিশনের সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।’
অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হবে উল্লেখ করে ইসি সচিব বলেন, ‘অর্থ মন্ত্রণালয় যদি অর্থ প্রেরণে সম্মতি প্রদান করে, তাহলে আমরা পরবর্তীতে জানাতে পারব কোন কোন আসনে কতটি ইভিএম মেশিন ব্যবহার করতে পারব।’
দ্বাদশ জাতীয় সংসদের ভোটে কত আসনে ইভিএম ব্যবহার করা যাবে এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, ‘যত বেশি সম্ভব ব্যবহার করা যায়। নির্বাচনি এলাকায় ভোটার সংখ্যা একেক জায়গায় একেক রকম। বড় এলাকা হলে সেখানে কম যাবে। এটা আমরা চূড়ান্ত করে হাতে রিপোর্ট পাওয়ার পর বলতে পারব।’
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটের আগে হুদা কমিশন দেড় লাখ ইভিএম কিনলেও সেগুলো সংরক্ষণের কোনো ব্যবস্থা করেনি। ফলে সেসব ইভিএম সচল রাখতে বেগ পোহাতে হচ্ছে আউয়াল কমিশনকে।
অযত্ন-অবহেলায় নষ্ট হয়েছে এসব যন্ত্র। একেকটি মেশিন কিনতে ২ লাখ ৩৪ হাজার টাকা লেগেছিল।
পাঁচ বছরের বেশি সময় অতিক্রান্ত হওয়ার পর এই দেড় লাখ ইভিএমের ৪০ হাজারই ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।