লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ (নেসকো) পিএলসি এর নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে মিটার না দেখে অস্বাভাবিক ভূতুড়ে বিদ্যুৎ বিল ও গ্রাহক হয়রানির প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে উপজেলার ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী ও সাধারণ জনগণ।
নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তরের কার্যালয়ের সামনে মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে শতাধিক ভুক্তভোগী গ্রাহক এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে।
মানববন্ধনে ভুক্তভোগী গ্রাহকরা অভিযোগ করেন, অস্বাভাবিক বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে করতে সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছে তারা। আগের তুলনায় এখন কয়েকগুণ বেশি বিদ্যুৎ বিল আসছে।
বিদ্যুৎ অফিসে যোগাযোগ করলে তারা বলেন, ‘আগামী মাস থেকে সব ঠিক হয়ে যাবে, কিন্তু মাসের পর মাস ধরে অস্বাভাবিক বিল আসতেই আছে। সময়মতো বিল পরিশোধ না করলে বিদ্যুৎ অফিসের লোকজন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে মামলা দিয়ে হয়রানি করছেন। বিচ্ছিন্ন সংযোগ পুনরায় নিতে গেলে ভূতুড়ে বিল পরিশোধের পাশাপাশি সংযোগ নিতে গুনতে হচ্ছে বাড়তি টাকা।’
মানববন্ধনে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করে বলেন, ‘বাড়ি বাড়ি গিয়ে মিটারের রিডিং দেখে বিল দেয়ার নিয়ম থাকলেও প্রতি মাসে অফিসে বসে অনুমান নির্ভর ভূতুড়ে বিল তৈরি করে গ্রাহকদের কাছে বিলি করেন মিটার রিডিংরা। এতে অতিরিক্ত বিলের বোঝা মাথায় নিয়ে বিদুৎ অফিসসহ বিভিন্ন জায়গা ধরনা দিচ্ছেন সাধারণ গ্রাহকরা। অনেক সময় অফিসের লোকজনের সঙ্গে ভূতুড়ে বিলকে কেন্দ্র করে গ্রাহকরা জড়িয়ে পড়ছেন বাগবিতণ্ডায়। দীর্ঘদিন থেকে এ সমস্যা চলতে থাকায় গ্রাহকদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।’
উপজেলার মদাতী ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা বিড়ি শ্রমিক রুহুল আমিন নামে এক গ্রাহক বলেন, ‘আমি ২০১৫ সালে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়েছি। বাড়িতে তিনটি বাল্ব ব্যবহার করে প্রতিমাসে বিদ্যুৎ বিল এক থেকে তিনশ ইউনিট আসত। তবুও কোনোদিন অভিযোগ না করে নিয়মিত বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করি আমি। কিন্তু হঠাৎ ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে তার ব্যবহৃত বিদ্যুৎ চার হাজার আটশ ইউনিট ব্যবহার দেখিয়ে একটি ভূতুড়ে বিল দেয় নেসকো কালীগঞ্জ। অথচ আমার অক্টোবর/২০২২ এ নিয়মিত মিটার রিডিং ছিল ১১৯২০ ইউনিট, যার পরবর্তী নভেম্বর মাসে মিটার রিডিং ১৬৭২০ ও ব্যবহৃত ইউনিট ৪৮০০ দেখিয়ে ৫৭ হাজার ৬৫৫ টাকার বিল দেয়। আবার পরবর্তী ডিসেম্বর মাসে মিটার রিডিং সর্বশেষ ১২০২০ ইউনিট দেখিয়ে ব্যবহৃত ৫০ ইউনিটের বিল দেন।
‘এ বিষয়ে বিদ্যুৎ অফিসে এসে এর প্রতিকার চাইলেও সেই ভূতুড়ে বিল ৩ হাজার টাকা উৎকোচ নিয়ে অফিসের বিল ডিস্ট্রিবিউটর নূরুল নামের একজন বিলটি কমিয়ে ৩৪ হাজার টাকা পরিশোধ করতে বলেন। বিদ্যুৎ অফিসের এসব অনিয়ম দূর হওয়া দরকার।’
এ ব্যাপারে নেসকোর নির্বাহী প্রকৌশলী রকি চন্দ্র দাস বলেন, ‘অভিযোগ থাকতেই পারে, সমস্যা থাকতেই পারে। রুহুল আমিনের বিষয়টি অনেক আগের তবে তিনি আগে আসেনি, একটু আগে এসেছিলেন। সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এমন অভিযোগ কোনো গ্রাহকের থাকলে আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখব।’