তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বিএনপি নেতারা জানেন যে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলেও তাদের সম্ভাবনা নেই। সে জন্য তারা নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। জনগণের কাছে না গিয়ে তারা এখন বিদেশি কূটনীতিকদের কাছে ক্ষণে ক্ষণে ধর্ণা দিচ্ছে। অনেকে বলছে যে তারা বিদেশি কূটনীতিকদের পদলেহন করছে।’
মঙ্গলবার সচিবালয়ে সমসাময়িক বিষয়ে মতবিনিময়কালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘পদলেহন করে হয়তো কোনো কোনো কূটনীতিকের মন জয় করা যেতে পারে; কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের মন জয় করা যায় না। মানুষের মন জয় করতে হলে, সমর্থন পেতে হলে তাদের কাছে যেতে হবে।’
‘নিরপেক্ষ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ৩০টির বেশি আসন পাবে না’- বিএনপি মহাসচিবের এমন মন্তব্য প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বেশ কয়েকবার বলেছিলেন যে সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ ৩০টি আসনও পাবে না।
‘ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাস, সেই সুষ্ঠু অবাধ নিরপেক্ষ ও বিশ্বব্যাপী গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে প্রথমে বিএনপি ২৯টি আসনই পেয়েছিল। অর্থাৎ বেগম জিয়ার ভবিষ্যদ্বাণী তার নিজেদের বেলায়ই সত্য হয়েছিল। এবার বেগম জিয়া কারাগারে। আমি আশ্চর্য হবো না যদি মির্জা ফখরুল সাহেবের এই ভবিষ্যদ্বাণী তার দলের ব্যাপারে সত্য হয়। এ ধরনের অবান্তর কথা বলা সমীচীন নয়।’
বিএনপি বার বার বলছে যে তারা বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না। এ প্রসঙ্গে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপি নেতারা আওয়ামী লীগের অধীনে নির্বাচনে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলেও তো কোনো সুযোগ নেই। কারণ নির্বাচন হবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে। নির্বাচন কমিশনের অধীনে যে নির্বাচন হবে আশা করি তাতে বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দল অংশ নেবে।’
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘ড. কামাল হোসেন সাহেবকে শ্রদ্ধা জানিয়েই বলছি, ২০১৮ সালের নির্বাচনে এই হেভিওয়েট রাজনীতিবিদকে হায়ার করেছিল বিএনপি। তিনি হায়ারে খেলতে গিয়ে ভালো খেলেননি। সেখানে মাত্র ৭টি আসন বিএনপি পেয়েছিল। এবার দেখা যাচ্ছে তারা আণুবীক্ষণিক দলগুলো, যারা রাজনীতির টোকাই তাদের ওপর ভর করেছে। বিভিন্ন দলীয় মোর্চা মিলে মনে হয় ৫১-৫২টি দল হয়েছে। মির্জা ফখরুল সাহেবকে আপনারা ৫২টি দলের নাম মুখস্ত বলতে বললে তিনি যদি তা পারেন তাহলে তাকে ধন্যবাদ দেব।’
সাম্প্রতিক পঞ্চগড় সফর নিয়ে প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সেখানে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের মানুষের কাছে জিজ্ঞাসা করলেই জানা যায় কারা এই ঘটনায় নেতৃত্ব দিয়েছে, কারা ঘটিয়েছে। বিএনপি যে তা করেছে সেটি তারা স্বীকার করে নিয়েছে। বিএনপি নেতা রুমিন ফারহানা, জিএম সিরাজ এবং হারুন-অর-রশীদের পোস্ট থেকেই প্রমাণ হয় যে তারাই এটি ঘটিয়েছে। তারা এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে আসলে দেশে একটি বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে চেয়েছিল, যা সফল হয়নি।’
বঙ্গবন্ধুর বায়োপিক নির্মাতা ভারতীয় দলের সঙ্গে মতবিনিময়
তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ মঙ্গলবার বিকেলে সচিবালয়ে তার দপ্তরে বঙ্গবন্ধুর বায়োপিক নির্মাতা ভারতীয় প্রতিনিধি দলের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। প্রতিনিধি দলে ছিলেন চিত্রনাট্য লেখক অতুল তিওয়ারি, লাইন প্রযোজক সতীশ শর্মা, সহযোগী পরিচালক দায়াল নিহালানি এবং ভারতের ন্যাশনাল ফিল্ম ডেভেলপমেন্ট করপোরেশনের প্রধান পান্ডুরাঙ্গ পি মাত।
মতবিনিময়কালে মন্ত্রীকে বঙ্গবন্ধুর বায়োপিকের সবশেষ কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত করেন তারা। মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার এবং বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুজহাত ইয়াসমিন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।