আহমদিয়া সম্প্রদায়ের (কাদিয়ানি) সালানা জলসা বন্ধের দাবিতে পঞ্চগড়ে গত ৩ মার্চ বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের প্রাণঘাতী সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকার ফায়দা নেয়ার চেষ্টা করছে বলে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
পঞ্চগড়ের সহিংসতা এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে দলের সহ দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সোমবার তিনি এ মন্তব্য করেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘পঞ্চগড়ে বিনা উসকানিতে গুলি চালিয়ে মানুষ হত্যা করা হয়েছে। সেখানে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টি করে ফায়দা লুটে নেয়ার চেষ্টা করছে সরকার। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ শিক্ষার্থী ও নিরীহ মানুষের ওপর পুলিশ যেভাবে গুলি চালিয়েছে তা সরকারের নিষ্ঠুরতার আরেকটি বহিঃপ্রকাশ। পুলিশের নির্বিচার গুলি ও হামলায় শত শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে।’
তিনি বলেন, ‘নিত্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, দফায় দফায় গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি, নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের দাবি আদায়, খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও মানুষের ভোটের অধিকার পুণঃপ্রতিষ্ঠায় যে গণতান্ত্রিক আন্দোলন চলছে সেই আন্দোলনে সাধারণ মানুষের ব্যাপক অংশগ্রহণ দেখে অবৈধ সরকার ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে।
‘সরকার বুঝে গেছে, তাদের সময় দ্রুত ফুরিয়ে আসছে। তাই নানা নাটক ঘটিয়ে জনগণের আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে নেয়ার কূটকৌশল চালাচ্ছে।’
ফখরুল বলেন, ‘মানুষের ভোট ও মত প্রকাশের অধিকার হরণকারী ও জনদুর্ভোগ সৃষ্টিকারী নিশিরাতের ভোটের সরকার পরিকল্পিতভাবে দেশে অশান্ত পরিবেশ সৃষ্টির অপচেষ্টা করছে। বর্তমানে দেশের মানুষের কোন নিরাপত্তা নেই, নেই জানমালের নিরাপত্তা।’
তিনি বলেন, ‘যেখানেই সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হচ্ছে সেখানেই আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও দলীয় সন্ত্রাসীদের লেলিয়ে দিচ্ছে সরকার। সাধারণ মানুষের ওপরও গুলি চালাতে কুন্ঠাবোধ করছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘স্বাধীনতাত্তোর আওয়ামী সরকার হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা চালিয়ে, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টি করে দেশে-বিদেশে ফায়দা লুটেছিল। এই ভোটারহীন সরকারও একই কায়দায় ধর্মীয় বিভেদ সৃষ্টি করে নিজেদের ক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ী করার নানা ধরনের অপকৌশল চালাচ্ছে।
‘জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে কুৎসিত মিথ্যাচার, পঞ্চগড়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-জনতার ওপর গুলিবর্ষণ, বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হামলা-মামলা, গ্রেপ্তার, নিপীড়ন, নেত্রকোণায় সাবেক এমপির বাড়িতে পুলিশি হামলা, সাবেক এমপি হারুন অর রশীদ ও ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানাকে নিয়ে অশ্রাব্য মিথ্যাচারের ঘটনা সবই একই সূত্রে গাঁথা।’
তিনি আরও বলেন, ‘জনগণের মেসেজ পরিষ্কার। নানা কারসাজি করে জনদৃষ্টিকে ভিন্ন খাতে নেয়া যাবে না। বাধা-বিপত্তি, হামলা-মামলা উপেক্ষা করে জনগণ তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করবেই।’