চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার নাগদহ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ স্বতন্ত্র প্রার্থী (চশমা) ও আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রার্থীর কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থক ও স্কুলছাত্রীসহ তিনজন এবং নৌকা প্রার্থীর আটজন আহত হয়েছেন।
নাগদহ ইউনিয়নের জহুরুলনগর ও বলিয়ারপুর গ্রামে শনিবার রাত ৮টা থেকে শুরু হয়ে দফায় দফায় রাত ১১টা পর্যন্ত সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
আহতদের মধ্যে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর কর্মীরা হলেন নাগদহ ইউনিয়নের জহুরুলনগর ক্লাব পাড়ার ৫৫ বছর বয়সী খবির উদ্দিন, তার দুই ভাই ৪৫ বছর বয়সী আনিছুর রহমান ও ৪০ বছর বয়সী দবির উদ্দিন এবং একই এলাকার ৩৫ বছর বয়সী মিয়াজান আলী, ৩৬ বছর বয়সী আকরাম হোসেন, বলিয়ারপুর গ্রামের ৪৬ বছর বয়সী আব্দুস সেলিম, একই এলাকার ৫০বছর বয়সী বাবলুর রহমান ও ৪০ বছর বয়সী কেসমত আলী।
চশামা প্রার্থীর কর্মীদের মধ্যে আহত হয়েছেন বলিয়ারপুর গ্রামের পশ্চিমপাড়ার ৪০ বছর বয়সী ইসরাইল হোসেন বুদো, তার ছেলে ২৪ বছর বয়সী মামুনুর রশিদ এবং মেয়ে নাগদাহ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী ১৫ বছর বয়সী আয়েশা আক্তার মাইশা।
নৌকার প্রার্থী হায়াত আলী বলেন, ‘শনিবার রাতে আমরা মোটরসাইকেল নিয়ে মিছিল করছিলাম। এ সময় চশমার প্রার্থীর কর্মীদের সঙ্গে আমাদের কর্মীদের কথা কাটাকাটি হয়। এরই একপর্যায়ে তারা আমাদের কর্মীদের লাঠি, রড ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করলে আমাদের আটজন কর্মী আহত হয়।’
চশামা প্রতীকের প্রার্থী এজাজ ইমতিয়াজ জোয়ার্দ্দার বিপুল বলেন, ‘শনিবার রাতে নৌকার কর্মীরা আমার অফিস ভাঙচুর করে। পরে তারা নিজেরাই নিজেদের অফিস ভাঙচুর করে আমাদের ফাঁসানোর চেষ্টা করে। শুধু তাইনা, নৌকার কর্মীরা আমার কর্মী ইসরাইস হোসেন বুদোর বাড়িতে হামলা চালিয়ে তার বাড়ি ভাঙচুর করে এবং বুদো ও তার ছেলে-মেয়েকে পিটিয়ে আহত করে।’
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক আবদুল কাদের বলেন, ‘জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা এগারোজনের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আমরা তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে হাসপাতালে ভর্তি থাকার পরামর্শ দিয়েছি। তাদের মধ্যে দবির উদ্দিনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।’
আলমডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, দুই পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। চশমা প্রার্থীর অফিস ও তার কয়েকটা মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেছে। এতে উভয় পক্ষের কয়েকজন আহত হয়েছে। এখন পর্যন্ত থানায় কেউ অভিযোগ করেনি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরবর্তীতে এলাকায় যেন কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সে বিষয়ে পুলিশ সতর্ক রয়েছে।