বিজয়ীদের হাতে ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০২১’ তুলে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বৃহস্পতিবার এ পুরস্কার তুলে দেয়া হয়। এ বছর ২৭ ক্যাটাগরিতে ৩৪টি পুরস্কার দেয়া হয়। আজীবন সম্মাননা পান প্রখ্যাত অভিনয়শিল্পী ডলি জহুর এবং ইলিয়াস কাঞ্চন।
এবারে যৌথভাবে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র নির্বাচিত হয়েছে ‘লাল মোরগের ঝুঁটি’ ও ‘নোনাজলের কাব্য’। শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র পরিচালক পুরস্কার পেয়েছেন রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত (নোনাজলের কাব্য)। শ্রেষ্ঠ অভিনেতার পুরস্কার জিতেছেন যৌথভাবে সিয়াম আহমেদ (মৃধা বনাম মৃধা) ও মীর সাব্বির মাহমুদ (রাতজাগা ফুল)। এছাড়া মুজিববর্ষের বিশেষ চলচ্চিত্রের পুরস্কার পেয়েছে ‘টুঙ্গিপাড়ার মিয়া ভাই’। যৌথভাবে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হয়েছেন - আজমেরী হক বাঁধন (রেহানা মরিয়ম নূর) ও তাসনোভা তামান্না (নোনাজলের কাব্য)।
এ ছাড়া শ্রেষ্ঠ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র আকা রেজা গালিব (ধর), শ্রেষ্ঠ প্রামাণ্য চলচ্চিত্র কাওসার চৌধুরী (বধ্যভূমিতে একদিন), শ্রেষ্ঠ অভিনেতা পার্শ্ব চরিত্রে এম ফজলুর রহমান বাবু (নোনাজলের কাব্য), শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী পার্শ্ব চরিত্রে শম্পা রেজা (পদ্মপুরাণ), শ্রেষ্ঠ খল অভিনেতা চরিত্রে আবদুল মান্নান জয়রাজ (লাল মোরগের ঝুঁটি), শ্রেষ্ঠ অভিনেতা কৌতুক চরিত্রে প্রভাষ কুমার ভট্টাচার্য্য মিলন (মৃধা বনাম মৃধা), শ্রেষ্ঠ শিশুশিল্পী আফিয়া তাবাসসুম (রেহানা মরিয়ম নূর), শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালক সুজেয় শ্যাম ( যৈবতী কন্যার মন), শ্রেষ্ঠ গায়ক কেএম আবদুল্লাহ-আল-মুর্তজা মুহিন ( শোনাতে এসেছি আজ-পদ্মপুরাণ), শ্রেষ্ঠ গায়িকা চন্দনা মজুমদার ( দেখলে ছবি পাগল হবি-পদ্মপুরাণ), শ্রেষ্ঠ গীতিকার প্রয়াত গাজী মাজহারুল আনোয়ার (অন্তরে অন্তর জ্বালা-যৈবতী কন্যার মন), শ্রেষ্ঠ সুরকার সুজেয় শ্যাম (অন্তরে অন্তর জ্বালা-যৈবতী কন্যার মন), শ্রেষ্ঠ কাহিনিকার রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত ( নোনাজলের কাব্য), শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার নূরুল আলম আতিক (লাল মোরগের ঝুঁটি), শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা তৌকীর আহমেদ (স্ফুলিঙ্গ), শ্রেষ্ঠ সম্পাদক সামির আহমেদ (লাল মোরগের ঝুঁটি), শ্রেষ্ঠ শিল্প নির্দেশক শিহাব নূরুন নবী ( নোনাজলের কাব্য), শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক দলগত-সৈয়দ কাশেফ শাহবাজি, সুমন কুমার সরকার, মাজহারুল ইসলাম রাজু (লাল মোরগের ঝুঁটি), শ্রেষ্ঠ শব্দগ্রাহক শৈব তালুকদার (রেহানা মরিয়ম নূর), শ্রেষ্ঠ পোশাক ও সাজসজ্জা ইদিলা কাছরিন ফরিদ (নোনাজলের কাব্য)।
দলগতভাবে শ্রেষ্ঠ মেকাপম্যান পুরস্কার পেয়েছেন- মো. ফারুখ, মো. ফরহাদ রেজা মিলন (লাল মোরগের ঝুঁটি) ও শিশুশিল্পী শাখায় বিশেষ পুরস্কার পেয়েছেন জান্নাতুল মাওয়া ঝিলিক (যা হারিয়ে যায়)।
পুরস্কার হিসেবে নির্বাচিত প্রত্যেককে ১৮ ক্যারেট মানের ১৫ গ্রাম ওজনের স্বর্ণ দিয়ে তৈরি একটি পদক, পদকের একটি রেপ্লিকা ও এককালীন নির্ধারিত পরিমাণ সম্মানী ও সম্মাননাপত্র দেয়া হয়। আজীবন সম্মাননাপ্রাপ্ত অভিনয় শিল্পী তিন লাখ, শ্রেষ্ঠ পূর্ণদের্ঘ্য চলচ্চিত্র প্রযোজক, শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র পরিচালক দুই লাখ ও অন্যান্য ক্ষেত্রে বিজয়ীরা এক লাখ টাকা করে অর্থ পুরস্কার পান।
পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক তথ্য মন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।
২০২১ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের জন্য এ বছর মুক্তিপ্রাপ্ত ২১টি পূর্ণদের্ঘ্য, ১৭টি স্বল্পদৈর্ঘ্য ও ৭টি প্রামাণ্য চলচ্চিত্রসহ মোট ৪৫টি চলচ্চিত্র জমা পড়ে। এর মধ্য থেকেই মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত ১৩ সদস্যের জুরি বোর্ড সেরাদের নির্বাচিত করে।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন দেশের জনপ্রিয় দুই তারকা ফেরদৌস আহমেদ ও নুসরাত ফারিয়া। অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু ও দেশ বন্দনা নিয়ে ওয়ার্দা রিহাব ও তার দলের পরিবেশনা ছিল। আরও পারফর্ম করেন অপু বিশ্বাস, নিপুণ, তারিন, বাপ্পি চৌধুরী, জায়েদ খান, ইমন, নীরব, দীঘি, আঁচল, পূজা চেরি, ঐশী, তমা মির্জাসহ ২৬ জন শিল্পী। গান গেয়ে মঞ্চ মাতান পার্থ বড়ুয়া, আঁখি আলমগীর, ইমরান, কোনাল, লিজা সাব্বির, নন্দিতা ও নিশিতা বড়ুয়া।