বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘প্যানকেকে আটকা পড়ে আছেন স্বপন’

  •    
  • ৮ মার্চ, ২০২৩ ২১:০৮

ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মকর্তা বলেন, “একাধিক ছাদ ভেঙে এক জায়গায় পড়ে থাকলে এটাকে আমরা ‘প্যানকেক’ বলি। নিখোঁজ স্বপন বেজমেন্টের যে অংশে থাকতে পারেন বলে স্বজন ও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, সেই জায়গাটায় একাধিক ছাদের স্লাব ভেঙে পড়ে আছে; যেটা প্যানকেকের মতো।”

গুলিস্তানের সিদ্দিকবাজারে বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের বেজমেন্টে ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে আছেন মেহেদি হাসান স্বপন। এমনটা ধারণা করে স্বজনরা অপেক্ষায় আছেন, কখন ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকর্মীরা স্বপনকে উদ্ধার করে তাদের কাছে ফিরিয়ে দেবেন।

তবে ফায়ার সার্ভিস বলছে, বেজমেন্টের যে অংশটায় স্বপন আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে তা ‘প্যানকেক’ অবস্থায় আছে। সেখান থেকে তাকে এখনই উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছে না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মকর্তা বলেন, “একাধিক ছাদ ভেঙে এক জায়গায় পড়ে থাকলে এটাকে আমরা ‘প্যানকেক’ বলি। নিখোঁজ স্বপন বেজমেন্টের যে অংশে থাকতে পারেন বলে স্বজন ও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, সেই জায়গাটায় একাধিক ছাদের স্লাব ভেঙে পড়ে আছে; যেটা প্যানকেকের মতো।

“ভারি স্লাবগুলো কেটে বা সরিয়ে স্বপনকে উদ্ধার করতে হবে। অথচ ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ভারি যন্ত্র ব্যবহার করা যাচ্ছে না। এজন্য বড় বড় স্লাবগুলো কেটে তাকে বের করে আনতে সময় লাগবে।”

স্বপনের স্বজনরা জানান, বেজমেন্টে থাকা ‘বাংলাদেশ স্যানিটারি’ দোকানের ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত ছিলেন স্বপন। এক যুগের বেশি সময় ধরে তিনি এই প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন। বাড়ি নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে।

স্বপনের বোন জামাই আবু তাহের বিস্ফোরণ হওয়া ভবনের সামনে মঙ্গলবার থেকে অপেক্ষা করছেন। উদ্ধারকর্মীরা একেকটি মরদেহ বের করে আনেন আর তিনি ছুটে যান- স্বপনকে বের করা হয়েছে কিনা। বার বারই হতাশ হয়ে ফিরে আসেন তিনি।

বুধবার সন্ধ্যায় ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাংবাদিকদের আবু তাহের বলেন, ‘আমার বাসা খুলনায়। গতকাল রাতে আমার বাসায় যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সন্ধ্যায় ফোন করে ওর মোবাইল বন্ধ পাই। পরে খবর পাই ওর ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের ভবনটিতে বিস্ফোরণ হয়েছে। এরপর থেকেই নিখোঁজ স্বপন। তার মোবাইল নম্বরও বন্ধ।’

তিনি বলেন, ‘এই অপেক্ষা বড় যন্ত্রণার! আজ চোখের সামনে দুটি মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। তাই আশা করতে পারছি না স্বপন বেঁচে আছে। খুব করে চাইছি- জীবিত অবস্থায় উদ্ধার হোক। ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।’

এ ব্যাপারে ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক (ঢাকা) আক্তারুজ্জামান বলেন, ‘সর্বোচ্চ ঝুঁকি নিয়ে ভবনটির একদম বেজমেন্ট থেকে দুজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আরও একজন নিখোঁজ বলে আমরা তথ্য পেয়েছি। ভবন ও দোকান মালিকদের সঙ্গে কথা বলে নিখোঁজদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।’

উদ্ধার অভিযান দৃশ্যত বন্ধ

ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটির বেজমেন্ট থেকে বুধবার বিকেলে দুজনের মরদেহ উদ্ধারের পর দৃশ্যত উদ্ধার অভিযান বন্ধ রেখেছে ফায়ার সার্ভিস। স্বপন নিখোঁজ থাকলেও তাকে উদ্ধারে ভারি যন্ত্রপাতি ব্যবহার করতে পারছেন না উদ্ধারকর্মীরা।

বাহিনীটির দায়িত্বশীলরা বলছেন, ‘আমরা ঘটনাস্থলেই আছি। আমাদের কাজ চলমান। ভারি যন্ত্রপাতি ব্যবহারের আগে ভবনকে স্ট্যাবল করার জন্য আরও কিছু কাজ করতে হবে। সে কাজগুলো হয়ে গেলে ভারি স্লাবগুলো সরানো সম্ভব হবে।’

এদিকে ভবনের ধ্বংসস্তূপ থেকে তুলে আনা কংক্রিটের টুকরোগুলো রাখা হচ্ছিল সামনের সড়কে। উদ্ধার অভিযানের দ্বিতীয় দিন বুধবার বিকেল থেকে সেগুলো সিটি করপোরেশনের ট্রাকে করে সরানো হয়েছে।

ভবনটির সামনের সড়ক এখন পরিষ্কার। তবে যান চলাচলের জন্য ব্যস্ততম সড়কটি এখনই খুলে দেয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় সামনের সড়কে ভারি যান চলাচল বাড়তি ঝুঁকি তৈরি করবে।

মঙ্গলবার বিকেল পৌনে ৫টার দিকে গুলিস্তানে বিআরটিসি বাস কাউন্টারের কাছে সিদ্দিকবাজারে ৭ তলাবিশিষ্ট একটি ভবনে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। এতে পাশের ৫ তলাবিশিষ্ট আরেকটি ভবনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

এর মধ্যে সাততলা ভবন কুইন টাওয়ারের প্রথম ও দ্বিতীয় তলা বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে আহত হয়েছেন অনেকে। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রে বিস্ফোরণের ঘটনায় বুধবার রাত পর্যন্ত ২০ জন নিহত হওয়ার তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।

এই বিস্ফোরণের ঘটনায় আহত হন শতাধিক মানুষ। তাদের অনেককে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ অন্যান্য হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

এ বিভাগের আরো খবর