সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় নদীর তীর থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি সকালে এক যুবকের বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে তার পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হলেও হত্যা রহস্যের কিনারা করতে পারছিল না পুলিশ।
তবে তদন্ত শেষে জানা গেল, সাজ্জাদ আলী নামের এই যুবককে হত্যায় জড়িত তার আপন ভাই জাহাঙ্গীর আলী। যিনি সাজ্জাদ হত্যার পর বাদী হয় থানায় মামলা করেছেন।
বুধবার দুপুরে সিলেট মহানগর পুলিশের (এসএমপি) পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে এই হত্যা রহস্য উদঘাটনের তথ্য জানানো হয়। বাড়ির ছাদে টানানো কাপড় শুকানোর দড়ির সূত্র ধরে তারা খুঁজে পেয়েছে খুনিকে।
পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় জাহাঙ্গীর আলীসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মঙ্গলবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন জাহাঙ্গীর।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- লক্ষ্মীপুর সদর থানার সাহাজান, জালালাবাদ থানাধীন বসন্তরগাঁও এলাকার সিরাজ আলী ও জাহাঙ্গীর আলী। সিরাজ ও জাহাঙ্গীর দুজনই নিহত সাজ্জাদের ভাই। সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জের ধরে প্রবাস ফেরত সাজ্জাদকে হত্যা করা হয় বলে দাবি পুলিশের।
সংবাদ সম্মেলনে মহানগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) সুহেল রেজা বলেন, ‘লাশের পরিচয় শনাক্তের পর নিহত সাজ্জাদের ভাই জাহাঙ্গীর আলী বাদী হয়ে ২২ ফেব্রুয়ারি অজ্ঞাতদের আসামি করে দক্ষিণ সুরমা থানায় মামলা করেন।
‘তদন্তে নেমে সম্প্রতি পুলিশ সাজ্জাদের বাড়িয়ে যায়। ওই বাড়ির ছাদে গিয়ে দেখা যায়, ছাদে টানানো কাপড় শুকানোর রশির অর্ধেক অংশ কাটা। এই রশির নমুনা সংগ্রহ করে নিহত সাজ্জাদ আলীর হাত-পা বাঁধার রশির সঙ্গে মিল পায় পুলিশ। এরপর পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হত্যা মামলার বাদী জাহাঙ্গীর আলীকে থানায় নিয়ে আসে। তিনি প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সাজ্জাদকে হত্যার কথা স্বীকার করে। পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দা বসন্তরগাঁও এলাকার কবরস্থান থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।’
উপ-পুলিশ কমিশনার আরও বলেন, ‘প্রবাস ফেরত সাজ্জাদ আলীকে পারিবারিক দ্বন্দ্বের জের ধরে হত্যা করা হয়েছে। মূলত সাজ্জাদ আলী উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত জায়গা-জমি ভাগবাটোয়ারার তাগিদ দেয়ায় ভাইদের মধ্যে মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়। এর জের ধরেই তাকে হত্যা করা হয়। আর ঘটনা থেকে নিজেকে আড়ালে রাখতে জাহাঙ্গীর আলী বাদী হয়ে মামলা করেন।’