ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ইসলামি বক্তা মাওলানা শরীফুল ইসলাম ভূইয়া নূরীর ওপর হামলা চালিয়ে জিহ্বা কাটা ও মারধরের ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। র্যাব-৯ ও আখাউড়া থানা পুলিশের অভিযানে চট্টগ্রাম ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন স্থান থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তারা হলেন- বিজয়নগর উপজেলার শ্রীপুর গ্রামের জাকির হোসেন ওরফে জাক্কু ও মাহবুবুল আল ওরফে শিমুল, চাওড়া গ্রামের মো. সুমন এবং কুমিল্লা দেবিদ্বার গ্রামের (বর্তমানে চাওড়া দৌলতবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা) মো. আমিরুল ইসলাম ও সিঙ্গারবিল গ্রামের শাহিনুর ইসলাম।
র্যাব সূত্রে জানা যায়, গোয়েন্দা তথ্য ও তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় আসামিদের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। পরে র্যাবের একাধিক দল মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত চট্টগ্রাম ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন স্থান থেকে জাক্কু, শিমুল, সুমন ও আমিরুলকে গ্রেপ্তার করে।
জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তারা জানিয়েছেন, মাহফিলে ওই ইসলামি বক্তার বক্তব্যের কিছু অংশ তাদের কাছে গ্রহণযোগ্য মনে হয়নি। সে কারণে তারা হামলা চালিয়েছেন। এতে ওই ইসলামি বক্তার জিহ্বা কেটে যায় এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত পান।
এর আগে সোমবার রাত দেড়টার দিকে বিজয়নগর উপজেলার সিঙ্গারবিল গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে শাহিনুর ইসলামকে গ্রেপ্তার করে আখাউড়া থানা পুলিশ। তাকে মঙ্গলবার আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। এ নিয়ে এ ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
র্যাব-৯ ক্যাম্পের অধিনায়ক উইং কমান্ডার মুমিনুল হক বলেন, ‘গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে র্যাবের কাছে স্বীকার করেছেন। ধর্মীয় কোনো সংগঠনের সঙ্গে তাদের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই।’
হামলার ঘটনায় মাওলানা শরীফুল ইসলাম ভূইয়া নূরীর চাচী বাদী হয়ে মঙ্গলবার রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার ঘাটিয়ার গ্রামের মো. রায়হান ও বিজয়নগর উপজেলা শ্রীপুর গ্রামের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৭ জনকে আসামি করে মামলা করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই আবু সালেক সাংবাদিকদের জানান, আসামিরা আহত শরীফুল ইসলাম ভূইয়ার বক্তব্যে আগে থেকেই অসন্তুষ্ট ছিলেন। শনিবার রাতের মাহফিলেও তার বক্তব্যে অসন্তুষ্ট হয়ে তারা হামলা করেন। তবে ঠোঁট বা জিহ্বা কেটেছে লাঠি বা বাঁশের আঘাতে।
এদিকে বুধবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ইসলামী বক্তা শরীফুল ইসলাম। তিনি মুখে কোনো কথা বলতে পারছেন না। কেউ কিছু জিজ্ঞাসা করলে লিখে জবাব দিচ্ছেন। নিজের কোনো কথা থাকলেও তা লিখেই জানাচ্ছেন।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি কাগজে লিখে জানান, হামলাকারীরা কেন তাকে আঘাত করেছেন সেটি তিনি জানেন না। হামলাকারীরা তার বুকের ওপর উঠে মুখে ঘুষি মারে। তিনি চিৎকার করলে হামলাকারীরা তার জিহ্বায় আঘাত করে।