চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণের ঘটনায় দুর্ঘটনা ঘটা প্রতিষ্ঠানের তিন মালিকসহ ১৬ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে।
সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিস্ফোরণে নিহতদের একজন মো. আব্দুল কাদিরের স্ত্রী রোকেয়া বেগম এ মামলা করেন। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে দায়িত্ব ও কর্তব্যে অবহেলার অভিযোগ আনেন তিনি।
মামলার আসামি সীমা অক্সিজেন লিমিটেডের তিন মালিক হলেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মামুন উদ্দিন, তার ভাই পারভেজ উদ্দিন সান্টু এবং আশরাফ উদ্দিন ওরফে বাপ্পি। বাকি আসামিদের নাম জানাতে রাজি হয়নি পুলিশ।
সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তোফায়েল আহমেদ জানান, নিহতদের মধ্যে আব্দুল কাদেরের স্ত্রী বাদী হয়ে দায়িত্ব ও কর্তব্যে অবহেলার অভিযোগ মামলাটি করেছেন। মামলায় কারখানার তিন মালিকসহ ১৬ জনকে আসামি করা হয়েছে। দ্রুততম সময়ে মামলাটির তদন্ত শুরু করা হবে।
বিস্ফোরণের ঘটনা তদন্তে গঠিত কমিটি রোববার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন অনিয়মের কথা গণমাধ্যমকে জানান। তদন্ত কমিটির প্রধান ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রাকিব হাসান অক্সিজেন প্ল্যান্টে অনুমোদনহীন কার্বন ডাই-অক্সাইড ও নাইট্রোজেনের সিলিন্ডার পাওয়ার কথা জানান।
তদন্ত কমিটির সদস্য ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. সুমন বড়ুয়া জানান, বিস্ফোরণের পেছনে দক্ষতার অভাব অথবা সংশ্লিষ্টদের গাফলতিই দায়ী।
শনিবার বিকেল চারটার দিকে চট্টগ্রামে সীতাকুণ্ডের কদম রসুল এলাকায় সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিকট শব্দে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণের পরপরই প্ল্যান্ট ও পাশের তিনতলা অফিস ভবনে আগুন লেগে যায়। ফায়ার সার্ভিসের ৯ টি ইউনিট প্রায় দুই ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।
বিস্ফোরণে প্ল্যান্টের পাশে অফিসভবনসহ আশেপাশের কয়েকশ ভবনের কাঁচের দরজা-জানালা ভেঙে পড়ে। ধসে পড়ে অফিসের ইটের দেয়াল। তাছাড়া বিস্ফোরণের তীব্রতায় কেঁপে ওঠে আশেপাশের কয়েক কিলোমিটার এলাকা। আশপাশসহ আধা কিলোমিটার দূরেও ছিটকে পড়ে অসংখ্য লোহার টুকরো।
স্থানীয় প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৭ জন নিহত ও ২৩ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে একজন চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন রয়েছে।