চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণের ঘটনায় আহতদের মধ্যে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন প্রভাষ লাল শর্মার মৃত্যু হয়েছে। রোববার রাত সাড়ে ৯টার দিকে তার মৃত্যু হয়। এ নিয়ে বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৭।
নিহত ৫৫ বছর বয়সী প্রভাষ লাল শর্মা উপজেলার ভাটিয়ারী এলাকার বাসিন্দা।
চমেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নুরুল আলম আশেক বলেন, ‘রাত সাড়ে ৯টার দিকে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। দুর্ঘটনায় আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তির পর থেকে তার আর জ্ঞান ফেরেনি।’
এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তার অবস্থা সংকটাপন্ন বলে জানিয়েছিলেন চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান।
শনিবার বিকেল ৪টার দিকে চট্টগ্রামে সীতাকুণ্ডের কদম রসুল এলাকায় সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিকট শব্দে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণের পরপরই প্ল্যান্ট ও পাশের তিনতলা অফিস ভবনে আগুন লেগে যায়। ফায়ার সার্ভিসের ৯টি ইউনিট প্রায় দুই ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।
বিস্ফোরণে প্ল্যান্টের পাশে অফিস ভবন সহ আশেপাশের কয়েকশ’ ভবনের কাঁচের জানালা ভেঙে পড়ে। ধসে পড়ে অফিস ভবনের ইটের দেয়াল। তাছাড়া বিস্ফোরণের তীব্রতায় কেঁপে উঠে আশপাশের কয়েক কিলোমিটার এলাকা। আধ কিলোমিটার দূরেও ছিটকে পড়ে অসংখ্য লোহার টুকরো। আর তাই বিস্ফোরণের সময় প্ল্যান্টে ১১ জনের মতো কর্মরত থাকলেও হতাহতের সংখ্যা তার কয়েক গুণ।
স্থানীয় প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী বিস্ফোরণের ঘটনায় শনিবার রাত পর্যন্ত নিহত ৬ জন ও আহত ছিল ২৪ জন। তাদের মধ্যে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে ২০ জন। সীতাকুণ্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন ৪ জন। তবে রোববার সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ২ জন। চমেকে হাসপাতালে ভর্তি ১৮ জনের মধ্যে মাকসুদ ও প্রভাষ লাল শর্মা নামের দুজনকে আগেই নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে নেয়া হয়।
তাদের মধ্যে মাকসুদের অবস্থা সংকটমুক্ত হলেও দুদিনেও জ্ঞান ফেরেনি প্রভাষ লাল শর্মার। সবশেষ রাত সাড়ে ৯টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
বিস্ফোরণে নিহত অন্য ছয়জন হলেন- সীতাকুণ্ড উপজেলার জাহানাবাদ এলাকার শামসুল আলম, ভাটিয়ারীর বাংলাবাজার এলাকার মো. ফরিদ, লক্ষ্মীপুরের কমলনগরের মো. সালাউদ্দিন, নেত্রকোনার কলমাকান্দার রতন লকরেট, নোয়াখালীর সুধারামের মো. কাদের মিয়া ও ফটিকছড়ির সেলিম রিচিল।