বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

এনবিআর চেয়ারম্যান নিজেকে কী মনে করেন: প্রশ্ন হাইকোর্টের

  • নিজস্ব প্রতিবেদক   
  • ৫ মার্চ, ২০২৩ ২২:২৯

রিটের শুনানিতে আদালত রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘ওনি (এনবিআর চেয়ারম্যান) কেন আদালতের আদেশ ফলো করছেন না? কারণ কী? উনি নিজেকে কি সম্রাট ভাবেন? তার কাছে যে ব্যাখ্যা ও তথ্য চাওয়া হয়েছে, তা দাখিল করতে এনবিআরের চেয়ারম্যানকে বলবেন।’

উচ্চ আদালতের আদেশ প্রতিপালন না করায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানের বিষয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট।

তাকে উদ্দেশ্য করে হাইকোর্ট বলেছে, ‘তিনি (এনবিআর চেয়ারম্যান) নিজেকে কি সম্রাট ভাবেন? তিনি কেন আদালতের আদেশ মানছেন না? এরপর আদেশ প্রতিপালন না করলে তাকে তলব করা হবে।’

ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জের প্রতারণা নিয়ে দায়ের করা এক রিট শুনানিকালে রোববার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব কথা বলেন।

পরে আদালত ২৭ মার্চ পরবর্তী তারিখ ঠিক করে দেয়।

আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এম আবদুল কাইয়ুম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন। বিএফআইইউ’র পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শামীম খালেদ আহমেদ।

শুনানিতে আদালত রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘ওনি (এনবিআর চেয়ারম্যান) কেন আদালতের আদেশ ফলো (অনুসরণ) করছেন না? কারণ কী? উনি নিজেকে কি সম্রাট ভাবেন? তার কাছে যে ব্যাখ্যা ও তথ্য চাওয়া হয়েছে, তা দাখিল করতে এনবিআরের চেয়ারম্যানকে বলবেন।’

তখন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন বলেন, ‘বিষয়টি জানাব।’

ডিএজি আমিন উদ্দিন এ বিষয়ে তথ্য উপস্থাপন করে বলেন, মামলার তদন্ত চলছে।

তিনি বলেন, ‘গত ২ মার্চ শেষ বেলায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাগজপত্র হাতে এসেছে, যে কারণে হলফনামা করা হয়নি। আগামী সপ্তাহে দাখিল করা যাবে। তবে পত্রিকায় এসেছে, জামিন নিয়ে ভারতের কারাগার থেকে সোহেল রানা পালিয়ে গেছেন। ভারত থেকে হালনাগাদ তথ্য নিয়ে আসার চেষ্টা চলছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আইজিপির প্রতিবেদন একই ধরনের।’

অন্যদিকে রিটকারীদের আইনজীবী এম আবদুল কাইয়ুম বলেন, ‘আদেশ প্রতিপালনের জন্য সময় চাইলে আদালত সময় দিতে পারেন। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড তথা এনবিআরের চেয়ারম্যান প্রতিবেদন দাখিল করেননি। শেখ সোহেল রানার (বরখাস্ত পুলিশ পরিদর্শক) বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারির জন্য ইন্টারপোল কিছু তথ্য জানতে চেয়েছে, যা পরে দেয়া হয়নি বলে রাষ্ট্রপক্ষের হলফনামায় দেখা যাচ্ছে।

তখন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘শেখ সোহেল রানার বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারি হয়েছে, যার নম্বরও উল্লেখ করা হয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের রিপোর্ট পাইনি।’

এনবিআরকে জানিয়েছিলেন কিনা- আদালতের এমন প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রপক্ষের এই আইনজীবী বলেন, ‘হ্যাঁ, জানিয়েছি। বার বার অনুরোধ করা হয়েছে, গুরুত্ব দেখা যাচ্ছে না।’

তখন আদালত বলেন, ‘আমরা শেষ সুযোগ দিলাম। এটি দেখেন। বলে দেবেন, এবার প্রতিবেদন না দিলে তলব করা হবে। রেড নোটিশ জারি না হয়ে থাকলে জারির ব্যবস্থা বা কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তা দেখবেন। যে তথ্য চাওয়া হয়েছে তা দিতে এনবিআরের চেয়ারম্যানকে বলবেন। বিষয়টি ২৭ মার্চ কার্য তালিকায় আসবে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী একেএম আমিন উদ্দিন মানিক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আদেশ অনুযায়ী প্রতিবেদন দাখিল না করায় উষ্মা প্রকাশ করেছেন আদালত। আদালত বলেছেন, তিনি নিজেকে সম্রাট ভাবেন কিনা। এসব মন্তব্য করেছেন।’

রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এম আবদুল কাইয়ুম। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এর আগেও একবার আদেশ দিয়ে এনবিআরের চেয়ারম্যানকে প্রতিবেদন দিতে বলেছেন। কিন্তু তারপরও তারা কোনো প্রতিবেদন দেয়নি। যে কারণে আদালত তাদের প্রতি উষ্মা প্রকাশ করেছেন। আদালত বলেছেন, এরপর আদেশ অনুযায়ী প্রতিবেদন না হলে তাকে তলব করা হবে।’

ই-অরেঞ্জের পৃষ্ঠপোষক ও বরখাস্ত হওয়া বনানী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শেখ সোহেল রানাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে কী পদক্ষেপ নিয়েছেন তা জানাতে এবং ই-অরেঞ্জের লেনদেনের বিপরীতে রাজস্ব আদায় বিষয়ে স্বরাষ্ট্র সচিব, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ বিবাদীদের প্রতিবেদন দিতে ২৯ জানুয়ারি নির্দেশ দিয়েছিল এই বেঞ্চ।

এর আগে গত বছরের ৩ নভেম্বর বেশ কয়েক দফা নির্দেশনা দেয় আদালত। তারই ধারাবাহিকতায় মামলাটি শুনানির জন্য তালিকায় আসে। ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জ থেকে পণ্য কিনে প্রতারণার শিকার ৫৪৭ জন গ্রাহকের পক্ষে ছয়জন প্রতিনিধি গত বছরের মার্চে হাইকোর্টে রিট করেন। সেই রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত বছরের ৭ এপ্রিল হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেয়।

জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধান করে চার মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।

এরপর গত বছরের ৩ নভেম্বর বিএফআইইউ, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও পুলিশের মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করা হয়। আইজিপির প্রতিবেদন সুস্পষ্ট নয় এবং দুদকের প্রতিবেদন সন্তোষজনক নয় উল্লখ করে সেদিন আদালত নতুন করে ৩০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশসহ আদেশ দেয়।

এ বিভাগের আরো খবর