বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘১০ সেকেন্ড পর হইলে মরে যাইতাম’

  • প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম   
  • ৫ মার্চ, ২০২৩ ০৯:০৭

বিস্ফোরণটি মাত্র ১০ সেকেন্ড পর হলে মারা যেতেন জানিয়ে রিপন বলেন, ‘ওয়ার্কশপটা একটু বাহিরের দিকে। ওখান থেকে আমাদের মেইন যে প্ল্যান্ট, সেটার দিকে যাচ্ছি। ইশ্বর তো আমাকে বাঁচাইছেন, নইলে মরে যাইতাম, মাত্র ১০ সেকেন্ড। ১০ সেকেন্ড পর হইলে (বিস্ফোরণ) মরে যাইতাম।’

নেত্রকোণার কলমাকান্দা এলাকার রিপন মারাক। স্ত্রী, কলেজপড়ুয়া ছেলে আর ছোট ভাইকে নিয়ে থাকেন সীতাকুণ্ডের মাদামবিবির হাট এলাকায়।

গত পাঁচ বছর ধরে সীতাকুণ্ডের কদম রসুল এলাকার সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে যান্ত্রিক বিভাগে কাজ করছেন রিপন। শনিবার কাজে যাওয়ার কথা না থাকলেও জরুরি প্রয়োজনে গিয়েছিলেন কর্মস্থলে।

বিকেলে ওই অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণে অনেকের মতো আহত হন রিপন। বিস্ফোরণের সময় ধাতব কিছুর আঘাতে আহত হন তিনি।

তার দাবি, বিস্ফোরণ আর ১০ সেকেন্ড পর হলে প্রাণ হারানো ব্যক্তিদের তালিকায় থাকত তার নাম। এ জন্য স্রষ্টাকে ধন্যবাদ জানান গারো সম্প্রদায়ের এ ব্যক্তি।

চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের ক্যাজুয়ালিটি ওয়ার্ডে শনিবার রাতে কথা হয় রিপনের সঙ্গে।

তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, “আমি প্ল্যান্টের ভেতর ছিলাম। ভেতর বলতে ওয়ার্কশপে ছিলাম, ভেতরে যাচ্ছিলাম। তখন শব্দটা শুনি। কোন দিকে কী বিস্ফোরিত হয়েছে জানি না। শব্দটা শোনার পর দেখি সব অন্ধকার। আর কিছু মনে নেই।

“হুঁশ ফিরে দেখি সবকিছু নাই, চার দিক খোলা। আমি বলতেছি, ‘আমি কোথায় যাব, আমি কোথায় আছি?’ আমার এগুলো খেয়াল আছে। বেঁচে আছি এ রকম মনেই হয়নি। আমি কোথায় আছি আমি জানি না।”

তিনি আরও বলেন, ‘একটু পর আলো দেখে বুঝতে পারলাম বেঁচে আছি৷ আমি খুব বেশি ব্যথা পাইনি। আমরা এক গাড়িতে অনেকেই আসছি। আমি হাসপাতালে সুস্থ আসছি। ওখানে (ঘটনাস্থলে) আমার ফোরম্যান যে ছিল তাকে ধরে ধরে গেটের বাইরে নিয়ে গেছি।’

বিস্ফোরণটি মাত্র ১০ সেকেন্ড পর হলে মারা যেতেন জানিয়ে রিপন বলেন, ‘ওয়ার্কশপটা একটু বাহিরের দিকে। ওখান থেকে আমাদের মেইন যে প্ল্যান্ট, সেটার দিকে যাচ্ছি। ইশ্বর তো আমাকে বাঁচাইছেন, নইলে মরে যাইতাম, মাত্র ১০ সেকেন্ড। ১০ সেকেন্ড পর হইলে (বিস্ফোরণ) মরে যাইতাম।

‘আমি রাউন্ডে ছিলাম, ওই সময় রাউন্ড দিচ্ছি। ভিতর থেকে বিস্ফোরণটা হইছে। আর ১০ সেকেন্ড হইলে আরও ভিতরে চলে যাইতাম। আমাকে বাঁচায়া রাখছে। ধন্যবাদ ঈশ্বর।’

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের কদম রসুল এলাকায় শনিবার বিকেল চারটার দিকে সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হয়। এর পরপরই প্ল্যান্ট ও পাশের তিন তলা অফিস ভবনে আগুন লেগে যায়। ফায়ার সার্ভিসের ৯টি ইউনিট প্রায় দুই ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।

বিস্ফোরণে প্ল্যান্টের পাশে অফিসভবনের কাচের জানালা ভেঙে পড়ে। ধসে পড়ে ইটের দেয়াল। তা ছাড়া বিস্ফোরণের তীব্রতায় কেঁপে ওঠে আশেপাশের কয়েক কিলোমিটার এলাকা। আধা কিলোমিটার দূরেও ছিটকে পড়ে লোহার টুকরো। এ কারণে প্ল্যান্টে ১১ জনের মতো কাজ করলেও হতাহতের সংখ্যা তার কয়েক গুণ।

স্থানীয় প্রশাসনের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, শনিবার রাত পর্যন্ত বিস্ফোরণের ঘটনায় ছয়জনের প্রাণহানি ও ২১ জন আহত হয়েছেন।

আহত ব্যক্তিদের মধ্যে ১৭ জনকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল এবং বাকি চারজনকে সীতাকুণ্ডের একটি স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ইলিয়াস হোসেন চৌধুরী।

এ বিভাগের আরো খবর