রাজধানীর মিরপুর-১০ নম্বর শাহআলী প্লাজায় শনিবার সকাল পৌনে ১১টার দিকে বান্ধবী কাজিন ফাতিমাকে নিয়ে নিজের স্কুটিতে চেপে মোবাইল ফোন ঠিক করতে যান মারিয়া আক্তার মিম।
সেখানে পৌঁছানোর পর স্কুটি পার্ক করার সময় গতি কমিয়ে আনলে অজ্ঞাত একজন তার সামনে দিয়ে হাঁটতে থাকে। ওই সময় বার হর্ন দেয়ার পরেও সরে দাঁড়ায়নি ওই ব্যক্তি। উল্টো তিনি মিমের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। এর প্রতিবাদ প্রতিবাদ করায় মিমের স্কুটির ওপর আঘাত করে বসেন।
ওই ব্যক্তির আঘাতে মিম ও ফাতিমা দুইজনেই আহত হলেও মিমের বাম চোখের উপরে কেটে রক্তপাত হয়। পরে লোকজনের ভিড় বাড়তে শুরু করলে অজ্ঞাত ব্যক্তিটি পালিয়ে যান।
এ সময় জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করেন মিম। কাফরুল থানা থেকে পুলিশ এসে আশপাশের দোকানের ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার (সিসিটিভি) ফুটেজে ঘটনার সত্যতা দেখতে পায়। কিন্তু ফুটেজ পরিস্কার না থাকায় অপরাধীকে শনাক্ত করতে পারেনি।
মিম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ অজ্ঞাত ওই ব্যক্তি আমি এবং আমার বান্ধবীকে বেশ কয়েকটা ঘুষি মারে। ৯৯৯-এ ফোন দেয়ার পরে যে পুলিশ আসে তারা একটু সময় পরেই আমাদের রেখে অন্য কাজে চলে যায়। ’
‘পুলিশের আচরণ এমন ছিল যেন আমি নিজেই দোষী। পুলিশের উপস্থিতিতে আমাদের একজন ছেলে বন্ধুও আসে সেখানে। সেই বন্ধুর চুল বড় কেন এই নিয়েও পুলিশ অনেক প্রশ্ন করে।’
ক্ষোভ প্রকাশ করে মিম বলেন, ‘পরে আমি থানায় যাই। থানার পুলিশ বলেন আপনি তো তাকে চেনেন না। তার নামে মামলা করতে পারবেন না। সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পুলিশ মামলা না নিয়ে জিডি করতে বলেন। ’
‘‘জিডিতে সব শেষে পুলিশ আমাকে লিখতে বলেন, ‘আপাতত মামলা করতে ইচ্ছুক নই। তাকে খুঁজে পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেব।’ কিন্তু কেন এটা লিখতে হবে? পুলিশ আমাকেই বলেছে অপরাধীকে খুঁজতে। খুঁজলে নাকি পাব তাকে।’’
সার্বিক বিষয় জানার পরে ঢাকা জজকোর্টের অ্যাডভোকেট এবং আইন ও সালিশ কেন্দ্রের স্টাফ ল’ইয়ার নাহিদা খানম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘চোখের ওপরে আঘাতে রক্ত বের হয়েছে মেয়েটার। এটা তো গুরুতর আঘাত। ভিকটিমের চোখের অবস্থা দুই/তিন দিন পরে আরও খারাপ হতে পারে। ১৫৪ ধারা অনুযায়ী পুলিশ তো মামলা নিতে বাধ্য।’
মামলা করার ইচ্ছা নেই এমন কথা জিডিতে পুলিশ ভিকটিমকে লিখতে বলতে পারেন কি না জানতে চাইলে নাহিদা খানম বলেন, ‘সে কেন এটা লিখবে? সে লিখবে আমি মামলা করতে আগ্রহী। কিছু সমস্যার কারণে এখন জিডি করছি। পরে মামলা করব। কিন্তু ভিকটিমকে দিয়ে যেটা লেখানো হয়েছে তাতে বিষয়টা গুরুত্ব পাবে না।’
কাফরুল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি বিষয়টা জানি না। পুলিশ প্রথমে অভিযোগ নেবে। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে মামলা নেবে। ভিকটিম যদি মনে করেন যথোপযুক্ত সেবা পান নাই তিনি এসে বলুক আমাদের জানাক। এখানে আমি আছি, আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আছেন।’