‘ওবা (ও বাবা), কিল্লাই ফালাই গেলাগোই, ক্যানে গেলা গই? আঁরারে রাখি কিল্লাই গ্যালা? এখন আঁর বইনোরে কী হইয়ুম দে? কী জবাব দিইয়ুম যে?’
শনিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে জরুরি বিভাগের বারান্দায় বাবার মৃত্যুর শোকে এভাবেই বিলাপ করছিলেন আনুমানিক ত্রিশ বছর বয়সী মরিয়ম আক্তার।
তার বাবা ৫০ বছর বয়সী শামসুল আলম সীতাকুণ্ডের কদমরসুল এলাকায় শনিবার অক্সিজেন প্ল্যান্ট বিস্ফোরণে নিহত হয়েছেন।
মরিয়মের পাশেই মুখে হাত দিয়ে বসে আছেন তার ছোটভাই আলমগীর। পরিবারের সবার ছোট আলমগীর পড়েন একাদশ শ্রেণিতে, কীভাবে কী হয়ে গেলো বুঝে উঠতে পারছেন না তিনি। তার মুখে কোনো কথা নেই, কিছু জিজ্ঞেস করলে উত্তর দিচ্ছেন ইশারায়।
মরিয়মের অদূরেই দাড়িয়ে ছিলেন তার স্বামী মো. নাছির। তিনি নিউজবাংলাকে জানান, শামসুল আলমের বাড়ি সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী এলাকায়। ঠিকাদার হিসেবে কাজ করতেন তিনি। ঘটনার সময় বিস্ফোরণস্থল সীমা অক্সিজেন প্ল্যাট থেকে কিছুটা দূরে রাস্তার পাশে ছিলেন তিনি। বিস্ফোরণে তীব্রতায় একটি ধাতব টুকরো উড়ে গিয়ে পড়ে তার মাথার ওপর। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে চমেক হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
শামসুলের চার সন্তানের মধ্যে তিনজন মেয়ে। তাদের মধ্যে মরিয়ম দ্বিতীয় জন। আলমগীর সবার ছোট। শ্বশুরের মৃত্যুর পর আলমগীরের পড়াশোনার খরচ ও পরিবারের ভরণপোষণ কীভাবে চলবে তা নিয়েও চিন্তিত নাছির।