লক্ষ্মীপুরে বয়োবৃদ্ধ এক ভিখারিনির কোলে ৩ মাসের একটি ছেলে শিশুকে রেখে যান তার মা। ওই নারীর দাবি, মানসিক দুঃশ্চিন্তা থেকে ভুলে বৃদ্ধা ভিখারিনি সালমা বেগমের কাছে ওই শিশুকে রেখে চলে যান তিনি।
সদর মডেল থানায় বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে এমনটিই জানিয়েছেন ওই শিশুটির মা।
এ সময় জেলা পুলিশ সুপার মাহফুজ্জামান আশরাফ, পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির জেলা সভানেত্রী সেলিনা মাহফুজ, সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোসলেহ উদ্দিন ও জেলা কমিউনিটিং পুলিশের সদস্য সচিব জাকির হোসেন ভূঁইয়া আজাদ উপস্থিত ছিলেন। জেলা পুলিশ সুপার শিশুটির মা ও দাদার সঙ্গে কথা বলেছেন।
এসপি মাহফুজ্জামান আশরাফ বলেন, ‘এখনই আমরা শিশুটিকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করছি না। আদালতের মাধ্যমে শিশুটিকে হস্তান্তর করা হবে। শিশুটি বেলাল হোসেন ও নিশি আক্তার দম্পতির হেফাজতে রয়েছে।’
ওই শিশুর বাবা সৌদি প্রবাসী। তার বাড়ি রামগতি উপজেলার চরবাদাম ইউনিয়নে। ওই দম্পতির সংসারে আরও ৩ মেয়ে রয়েছে। তারা লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডে বাসা ভাড়া থাকেন।
স্বজনরা জানায়, শিশুটির বাবা দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরবে চাকরি করেন। ৪ বছর আগে তিনি এসে ধারদেনা ও ঋণ নিয়ে ঘর নির্মাণ করেন। প্রায় ৭-৮ মাস আগে ফের তিনি সৌদি চলে যান। কিন্তু ঠিকমতো ঋণের টাকা দিচ্ছিলেন না তিনি। এতে তার স্ত্রী ঋণের টাকা পরিশোধ নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় পড়েন। এ নিয়ে প্রায়ই মোবাইলে স্বামীর সঙ্গে তার ঝগড়া হতো।
ওই শিশুর মা জানান, তার বাবার বাড়ি সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ চরমনসা গ্রামে। বুধবার দুপুর ২টার দিকে বাবার বাড়ি থেকে বাসে তিনি তার ভাড়া বাসায় ফিরছিলেন। বাস থেকে শিশুটিকে নিয়ে লক্ষ্মীপুর-রামগতি সড়কের পৌরসভার মজুপুর এলাকায় আধুনিক হাসপাতালের সামনে নামেন। এর আগে বাসে তার স্বামীর সঙ্গে ঋণের টাকা পরিশোধ নিয়ে ফোনে কথা কাটাকাটি হয়। এতে দুঃশ্চিন্তা থেকে শিশুটিকে তিনি ভিখারিনির কাছে রেখে চলে যান। ভুলে শিশুটিকে নেননি তিনি।
পরে ভিখারিনি সালমার কাছ থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে জেলা পুলিশ লক্ষ্মীপুর পৌরসভার কাউন্সিলর জসিম উদ্দিন মাহমুদের ভাই বেলালের পরিবারের হেফাজতে রাখেন। বাসায় যাওয়ার পর সন্ধ্যায় শিশুটির কথা মনে পড়ে তার মায়ের। পরে ফেসবুকের মাধ্যমে শিশুটির অবস্থান নিশ্চিত হয়ে জেলা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন পরিবারের লোকজন।