চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকই বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর গেইট হিসেবে পরিচিত। চট্টগ্রাম-রাঙ্গামাটি মহাসড়ক সংলগ্ন গেইটটি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় অভিমুখে প্রবেশ করতে হয়। তবে রাজনৈতিক নেতাদের ব্যানার-ফেস্টুনে পুরোপুরিই ঢেকে গেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ফটক । বাইরে থেকে বোঝার উপায় নেই এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটক।
শিক্ষার্থীরা জানান, অতিরিক্ত ব্যানার-ফেস্টুনে দৃষ্টিকটু দেখায় ফটক। এতে ক্ষুণ্ন হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, তারা এর আগেও ব্যানার-ফেস্টুন অপসারণ করেছে। এ জন্য সৌন্দর্যবর্ধন কমিটির পক্ষ থেকে সিদ্ধান্তও নেয়া আছে। আবার অপসারণের পূর্বে তারা মাইকে ঘোষণা দিয়ে দ্রুতই ব্যানার-ফেস্টুন অপসারণ করবে।
বিশ্ববিদ্যালয় গিয়ে দেখা যায়, ফটকের ডান পাশের স্তম্ভটির ওপরের অংশ ঢাকা পড়েছে উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাইমুল হাসান রাকিবের ব্যানারের আড়ালে। ফলে দেখা যাচ্ছে না ডান স্তম্ভে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ও লোগো । স্তম্ভের সঙ্গে লাগোয়া করে বামদিকে লাগানো হয়েছে আরেকটি রাজনৈতিক ব্যানার। ব্যানারে উত্তর জেলা যুবলীগের নতুন কমিটিতে স্থান পাওয়া নেতৃবৃন্দকে শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে। এর ওপরে রয়েছে অন্য আরেকটি রাজনৈতিক দলের (জাতীয় পার্টি) ব্যানার।
বাম পাশের স্তম্ভটির ওপর থেকে প্রায় নিচ পর্যন্ত ঢাকা পড়েছে উত্তর জেলা যুবলীগে হাটহাজারী থেকে স্থান পাওয়া দুই নেতাকে অভিনন্দন জানানো ব্যানারে।
এর বাইরেও ফটকের গায়ে লাগানো আছে নানা ধরনের কোচিং, রাজনৈতিক ও বাণিজ্যিক পোস্টার। পুরো অঞ্চল জুড়ে দেখা মেলে নানা ধরনের ব্যানার-পোস্টারের।
ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী আইয়ুবুর রহমান তৌফিক বলেন, ‘একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটক যদি রাজনৈতিক ব্যানারে ঢাকা পড়ে সেটা আমাদের জন্য লজ্জাজনক। বিশ্ববিদ্যালয়ের নামফলক আমাদের পরিচয়ের জায়গা। সেটা যদি মুছে যায়, ঢাকা পড়ে, তা আমাদের মনে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এসব ব্যাপারে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখুক। ফটক ব্যানারের জঞ্জাল থেকে মুক্তি পাক।’
সহকারী প্রক্টর গোলাম কুদ্দুস লাভলু বলেন, ‘আমি বিষয়টি জেনে এস্টেট ও নিরাপত্তা দপ্তরকে বেশ কয়েকবার বলেছি। আমি বলেছিলাম এ বিষয়ে একটি নোটিশও লাগিয়ে দিতে। আমরা মাইকে ঘোষণা দিয়ে একটা আল্টিমেটাম দেব, তারপর আমরা এগুলো সরিয়ে দেব।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট শাখার প্রশাসক ড. মোহাম্মদ মঈনুল ইসলাম বলেন, ‘গত তিন মাস আগেও প্রক্টরিয়াল টিম ও নিরাপত্তা দপ্তরের মাধ্যমে অপসারণ করা হয়েছিল। এগুলো এমনিতেও নিষিদ্ধ। বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্যবর্ধন কমিটি থেকে নোট দিয়েছি সেগুলো সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ ও অপসারণ করে নিতে। প্রকৌশল দপ্তর, প্রক্টরের কার্যালয়, নিরাপত্তা দপ্তর সমন্বয় করে কাজ করবে এজন্য সময় লাগছে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর ফজল বলেন, ‘আমি এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করব না। প্রক্টরিয়াল বডি যদি উপস্থিত থাকে তাহলে আমি লোক দিয়ে সরিয়ে দিতে পারি। এটা আমার নোটিশে আসেনি।’