প্রবাসে বিশেষত মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থান করা বাংলাদেশিদের টার্গেট করে তাদের স্বজনদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে প্রতারক হ্যাকার চক্র। এমনই এক চক্রের চারজনকে আটক করেছে আইন-শঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
সুন্দরী নারীদের ছবি ব্যবহার করে ফেসবুক আইডি খুলে ফাঁদ পাতে এই প্রতারক হ্যাকার চক্র। আর না জেনে তাতে পা দিলেই তৎপর হয়ে ওঠে প্রতারকরা।
ফাঁদে পা দিয়ে কোনো প্রবাসী আলাপচারিতা শুরু করলে প্রতারকরা তার সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলে। এক পর্যায়ে ভিডিও কলে কথা বলার প্রস্তাব দিয়ে ইমো নম্বর জেনে নেয়। এরপর সেটি হ্যাক করে ওই নম্বরের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় তারা।
লাগাতার আলাপচারিতায় টার্গেট করা প্রবাসীর স্বজনদের আদ্যোপান্ত জেনে নেয় তারা। সব তথ্য কৌশলে সংগ্রহ করার পর প্রবাসীর অসুস্থতা ও অন্যান্য সমস্যার কথা বলে পরিবার থেকে টাকা আদায় করে প্রতারকরা।
ইরাক প্রবাসী এক যুবককে ফাঁদে ফেলে পরিবার থেকে প্রায় ৬ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার পর রাজধানীর হাজারীবাগ থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়। এই মামলায় হ্যাকার চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (দক্ষিণ)।
গ্রেপ্তার চারজন হলেন- সোহাগ আহমেদ, রিপন ইসলাম, সোহেল রানা ও লিটন আলী।
সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইমের (দক্ষিণ) এডিসি সাইফুর রহমান আজাদ তাদেরকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, সোহাগ এই চক্রের মাস্টারমাইন্ড। উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে এই প্রতারক মোবাইল হার্ডওয়্যার অ্যান্ড সফটওয়্যার ফিক্সিংয়ের কাজ শেখে। আবার কণ্ঠ বদল করে নারীদের সুরে কথা বলায়ও সে পারঙ্গম। এই প্রতারণায় সে সঙ্গী হিসেবে নেয় আপন ভাই রিপনকে। পরে সহযোগী হিসেবে সোহেল ও লিটন যোগ দেয়।
ইমোর মতো অ্যাপস ব্যবহারে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন এডিসি সাইফুর রহমান আজাদ। তিনি বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলাপচারিতার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। যাচাই-বাছাই করে বিকাশ বা অন্য নম্বরে লেনদেন করতে হবে। অপরিচিত গ্রুপ বা গ্রুপকলে নিজেকে যুক্ত করা যাবে না। সতর্কতার সঙ্গে ইমোসহ অন্যান্য অ্যাপস ব্যবহার করলে এসব প্রতারক ফাঁদে ফেলতে পারবে না।’