বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রাজনীতি নিয়ে নাটক শুরু হয়েছে মন্তব্য করে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, যথাসময়ে রাজনীতিতে আসবেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী।
জাতীয়তাবাদী তাঁতীদলের ৪৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাবে সোমবার আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
দুর্নীতির দুই মামলায় নির্বাহী আদেশে দণ্ড স্থগিত থাকায় জেলের বাইরে থাকা খালেদা জিয়া রাজনীতি করতে পারবেন কি না, তা নিয়ে দুই ধরনের বক্তব্য এসেছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের মন্ত্রীদের কাছ থেকে। এতে বিষয়টি নিয়ে তৈরি হয়েছে অস্পষ্টতা।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, তিনি রাজনীতি করতে পারবেন না, ব্যাপারটা এমন নয়। কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, খালেদা জিয়ার রাজনীতি করতে কোনো বাধা নেই, তবে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, শর্ত অনুযায়ী খালেদা জিয়া রাজনীতি করতে পারেন না। নির্বাচনের তো প্রশ্নই আসে না।
সে প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির মহাসচিব বলেন, খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে আটক করে রাখা হয়েছে; তাকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার রাজনীতি নিয়ে বিভিন্ন ধরনের নাটক শুরু হয়েছে। একজন মন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া রাজনীতি করতে পারবেন না। আরেকজন বলেন, তার রাজনীতি করতে বাধা নেই।
এসব বক্তব্যের উদ্দেশ্য ভালো নয় বলে মনে করেন ফখরুল। তার ভাষ্য, ‘উদ্দেশ্যে একেবোরেই ভলো না। তাদের উদ্দেশ্যে খারাপ। তারা দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চায়।’
ওই সময় তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার যখন রাজনীতি করার সময় আসবে, তখন তিনি রাজনীতি করবেন। তিনি দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী। তার রাজনীতির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে দল।
খালেদা জিয়ার সাজা ছয় মাস মেয়াদে স্থগিত না করে তাকে নিঃশর্ত মুক্তি দেয়ার দাবি পুনর্ব্যক্ত করেন ফখরুল।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় পাঁচ বছরের সাজা নিয়ে কারাগারে যান খালেদা জিয়া। রায়ের বিরুদ্ধে আপিল শুনানি শেষে ওই বছরের অক্টোবরে সাজা বেড়ে দ্বিগুণ হয় বিএনপি নেত্রীর। একই মাসে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় আরও ৭ বছরের সাজা হয় তার।
২০২০ সালের মার্চে দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ার সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন। তার জামিনের আবেদন বারবার নাকচ হওয়ার মধ্যে স্বজনরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে মুক্তির আবেদন নিয়ে যান। সরকারপ্রধানের নির্বাহী আদেশে ওই বছরের ২৫ মার্চ ছয় মাসের জন্য মুক্তি পান খালেদা জিয়া।
২০২২ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানান, ২০২৩ সালের ২৫ মার্চ পর্যন্ত দেশের ভেতরে নিজের মতো করে থাকতে পারবেন খালেদা জিয়া।
জাতীয় সংসদ নির্বাচন এগিয়ে আসার প্রেক্ষাপটে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা এরই মধ্যে নির্বাচনি প্রচার শুরু করেছেন। আর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে নানা কর্মসূচি দিয়ে আসছেন বিএনপির নেতারা।
এ অবস্থায় সম্প্রতি আলোচনায় আসে খালেদা জিয়ার রাজনীতি ও নির্বাচনের লড়ার প্রসঙ্গ।