প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যে কোনো আন্তর্জাতিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে স্মার্ট ক্রীড়াবিদ তৈরির প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সরকার। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলেছি। আমাদের পরবর্তী টার্গেট হল- দেশকে স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তর করা, যা স্মার্ট ক্রীড়াবিদ তৈরিতে সাহায্য করবে।’
রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর বাংলাদেশ আর্মি স্টেডিয়ামে শেখ কামাল দ্বিতীয় বাংলাদেশ যুব গেমস-২০২৩ এর চূড়ান্ত পর্বের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। সূত্র: বাসস
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, যুব গেমস ক্রীড়া অঙ্গনে নতুন মাত্রা যোগ করবে এবং তারকা খেলোয়াড় তৈরির একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে। তরুণরা যুব গেমসে অংশ নিয়ে খেলাধুলায় তাদের প্রতিভা বিকাশের সুযোগ পাবে এবং এভাবে নবীন ও শিশুদের খেলাধুলায় সম্পৃক্ত হতে অনুপ্রাণিত করবে।’
‘সরকার ক্রীড়া অঙ্গনে শ্রেষ্ঠত্ব বাড়ানোর পাশাপাশি দেশের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে।’
ক্রীড়াবিদদের ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধিশালী দেশ হিসেবে গড়ে তোলার সৈনিক হিসেবে বর্ণনা করে প্রধানমন্ত্রী যুব গেমসে তাদের সর্বাত্মক সাফল্য কামনা করেন।
আর্মি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠানে ক্রীড়াবিদদের মার্চপাস্ট। ছবি: বাসস
শেখ কামালের নামে শেখ হাসিনা দ্বিতীয় বাংলাদেশ যুব গেমস-২০২৩ এর নামকরণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিশেষ করে বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনকে অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী।
শেখ কামাল বয়সে তার চেয়ে ছোট এবং তার শৈশবের খেলার সঙ্গী ছিলেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কামাল বেঁচে থাকলে হয়তো দেশকে অনেক কিছু দিতে পারত। সে একজন বহুমুখী প্রতিভাবান ব্যক্তি ছিল। ফুটবল, ক্রিকেট, হকি এবং বাস্কেটবলের সঙ্গে যুক্ত ছিল সে।’
শেখ কামালকে আধুনিক ফুটবলের প্রতিষ্ঠাতা আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘সে আবাহনী ক্লাব প্রতিষ্ঠা করেছে এবং তরুণদের খেলাধুলায় সম্পৃক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে। সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রেও উৎকর্ষ অর্জন করেছিল। কয়েকটি নাটকে অভিনয়ও করেছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ তার যুবসমাজকে খেলাধুলায় যত বেশি সম্পৃক্ত করতে পারবে, ভবিষ্যতে তত বেশি লাভবান হবে। খেলাধুলায় অংশ নেয়ার মাধ্যমে তরুণদের মেধা ও বুদ্ধি বিকাশের পাশাপাশি তাদের মধ্যে প্রতিযোগিতামূলক মন তৈরি হবে যা তাদের খেলাধুলায় আরও অবদান রাখতে সাহায্য করবে।’
যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল, বিওএ সভাপতি ও সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ এবং এর মহাসচিব সৈয়দ শাহেদ রেজা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পদ্মা ব্যাংক লিমিটেডের চেয়ারম্যান এবং কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান, বোর্ড অফ ট্রাস্টিজ ড. চৌধুরী নাফিজ সরাফাত। তিনি এই আয়োজনের সংগঠকদের অন্যতম একজন।
অনুষ্ঠানে শেখ কামাল দ্বিতীয় বাংলাদেশ যুব গেমস-২০২৩ এর ওপর একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী পরে গেমসের জমকালো উদ্বোধন উপলক্ষে বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান প্রত্যক্ষ করেন।
বিওএ ২০১৮ সাল থেকে প্রতি চার বছর পর পর বাংলাদেশ গেমস এবং যুব গেমসের আয়োজন করে আসছে। গেমসের মূল উদ্দেশ্য ছিল বিভিন্ন বিভাগে জাতীয় দলের জন্য ভবিষ্যত খেলোয়াড় নির্বাচন করা এবং তরুণ ক্রীড়াবিদদের প্রতিভাকে বিকশিত করা।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামালের নামে আয়োজিত যুব গেমসের দ্বিতীয় আসরের চূড়ান্ত পর্বে ২৪টি ডিসিপ্লিনের ১৯৩টি ইভেন্টে প্রায় চার হাজার ক্রীড়াবিদ ১৯৩টি স্বর্ণ, ১৯৩টি রৌপ্য ও ২৮৭টি ব্রোঞ্জ পদকের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
এর আগে ২ থেকে ১০ জানুয়ারি আন্তঃউপজেলা প্রথম পর্ব ও ১৬ থেকে ২২ জানুয়ারি আন্তঃজেলা দ্বিতীয় পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকায় চূড়ান্ত পর্বে আটটি বিভাগ অংশ নিচ্ছে।