নিম্ন আয়ের ও দরিদ্র ১২ হাজার মানুষকে দক্ষিণাঞ্চলবাসীর স্বপ্নের পদ্মা সেতু ভ্রমণ করানোর উদ্যেগ নিয়েছেন পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী ও বরিশাল সদর আসনের সংসদ সদস্য জাহিদ ফারুক শামীম।
নগরীর গড়িয়ারপার এলাকা থেকে শনিবার সকাল ১০টার দিকে প্রথম পর্যায়ে ৩০০ জন ৬টি বাসে পদ্মা সেতুর উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। দক্ষিণাঞ্চলবাসীর স্বপ্নের পদ্মা সেতু দেখার সুযোগ করে দেয়ায় খুশি এসব মানুষ। তারা উদ্যোগগ্রহণকারীকেও জানিয়েছেন সাধুবাদ।
সকাল ৮টা থেকেই বরিশাল নগরীর গড়িয়ারপার এলাকার তিলক কলাডেমা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চত্বরে জমায়েত হতে থাকে নিম্নআয়ের মানুষরা। তাদের উদ্দেশ্যে পদ্মা সেতু ভ্রমণ। বরিশাল সদর আসনের সংসদ সদস্য ও পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীম নিজ উদ্যেগে এসব মানুষকে পদ্মা সেতু ভ্রমণের সুযোগ করে দেন।
জানা গেছে, পদ্মা সেতু ভ্রমণ আয়োজনের উদ্বোধন নগরীর ৩০ নম্বর ওয়ার্ড থেকে শুরু হলেও পর্যায়ক্রমে ৩০টি ওয়ার্ড ও সদর উপজেলার ১০ ইউনিয়নের দরিদ্র মানুষ অর্থাৎ যাদের সামর্থ্য নেই স্বপ্নের পদ্মা সেতুকে দেখার তাদের নিয়ে যাওয়া হবে পদ্মা সেতুতে। প্রতিটি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন থেকে বৃদ্ধদের প্রাধান্য দিয়ে ৩০০ জন করে পদ্মা সেতু ভ্রমণে নেয়া হবে। প্রথম দিনেই ৬টি বাসে ৩০০ জন পদ্মা সেতু ভ্রমনের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে। যাদের খাবার খরচ থেকে শুরু করে সব কিছুই বহন করবেন আয়োজক।
পদ্মা সেতু দেখতে যাওয়া জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘এতদিন টিভি মোবাইলে পদ্মা সেতু দেখেছি। তবে এবার নিজ চোখে পদ্মা সেতু দেখতে পেয়ে বেশ খুশি ও আনন্দিত আমরা।’
সুখী বেগম নামে এক বৃদ্ধা বলেন, ‘বাংলাদেশের এমন অর্জন দেখার হয়তো কোনোদিন সুযোগ হত না, যারা এই স্বপ্নের সেতু দেখার সুযোগ করে দিয়েছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ আমরা।’
আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘পরিবারের সবাইকে নিয়ে পদ্মা সেতু দেখতে যাচ্ছি। আমি যে টাকা আয় করি সেই টাকা দিয়ে পদ্মা সেতু দেখতে যাওয়ার মতো সক্ষমতা আমার নেই। আমাদের দেশের তথা দক্ষিণাঞ্চলবাসীর স্বপ্নকে কাছ থেকে দেখতে পাওয়ার ফ্রি সুযোগ পেয়ে বাসে উঠে পড়লাম।’
এই ভ্রমণের আয়োজক পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী ও বরিশাল সদর আসনের সংসদ সদস্য জাহিদ ফারুক শামীম বলেন, ‘এদিকে যে সেতু নির্মাণের কারণে বিশ্বের বুকে বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে, সেই সেতু দেখার সুযোগ আমাদের অঞ্চলের অনেকেরই হয়নি। পদ্মা সেতুর কারণে সব থেকে বেশি লাভবান হয়েছে বরিশালের মানুষ। আর এই অঞ্চলের যাদের পদ্মা সেতু দেখতে যাওয়ার সামর্থ্য নেই তাদের পদ্মা সেতু ঘুরে দেখার সুযোগ করে দিয়েছি আমি।
‘১২ সহস্রাধিক মানুষ এই সুযোগ পাবে। বিশেষ করে দরিদ্র বৃদ্ধ পুরুষ-মহিলাদের পদ্মা সেতু দেখানোর জন্য গুরুত্ব দিচ্ছি আমরা। বাঙ্গালির গর্ব অহংকার ও আত্মবিশ্বাসের প্রতীক পদ্মা সেতু দেখানোর এই আয়োজন নিম্নআয়ের এসব মানুষের মনে তৈরি করবে নতুন স্বপ্ন। যে স্বপ্নে ভর করে পদ্মা সেতুর মতো মাথা উঁচু করে বাঁচার সাহস জাগবে তাদের মনে।’