বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষ দিশেহারা। সরকারের লুটপাট, পাচার এবং সম্পদ অপচয়ের কারণে দেশের অর্থনীতি বিপর্যস্ত। এটা জনগণ আর সইতে পারছে না। তারা দ্রুত পরিবর্তন চায়। সেই পরিবর্তনে আগের মতোই বিরোধী দল নেতৃত্ব দেবে। এটা শুধু সময়ের ব্যাপার।
শুক্রবার সন্ধ্যায় ১২ দলীয় জোট, সমমনা দল ও এলডিপির লিয়াজোঁ কমিটির সঙ্গে বৈঠক শেষে নজরুল ইসলাম খান এসব কথা বলেন। রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এ বৈঠক হয়।
বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমরা দেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক অবস্থা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আমরা বেশ কিছুদিন ধরে আন্দোলন সংগ্রাম করছি। সেগুলো কেমন হচ্ছে, জনগণের মধ্যে কতটা প্রভাব পড়েছে, আন্দোলন কতটা অগ্রসর হয়েছে, এই মুহূর্তে জনগণের প্রত্যাশা কি, আগামী দিনে আমাদের কী করণীয় এসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।’
বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ‘আমাদের আকাঙ্ক্ষা এক। আমরা এই অবৈধ অনির্বাচিত ফ্যাসিবাদী সরকারের অবসান চাই। সেই লক্ষ্যে গণতান্ত্রিক শক্তি হিসেবে আমরা এই সংসদ বাতিল, সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা এবং তার নেতৃত্বে অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই। তার মধ্য দিয়ে জনগণের নির্বাচিত সরকার বাংলাদেশের দায়িত্ব নেবে। এর মধ্যে আমাদের কোনো বিরোধ নেই।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘আগামী দিনে কী আন্দোলন কর্মসূচি দেয়া যায় সে বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। আগামী কাল (শনিবার) বিভিন্ন জায়গায় আমাদের কর্মসূচি রয়েছে। সেখান থেকে নেতৃবৃন্দ কর্মসূচি ঘোষণা করবেন। এছাড়া বিভিন্ন জোট তাদের পক্ষ থেকে কর্মসূচি ঘোষণা করবে। এরপর কী হবে সে বিষয়ে আমরা আলোচনা করেছি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা যে বিশ্বাস নিয়ে ঐক্য করেছি, যে বিশ্বাস নিয়ে যুগপৎ আন্দোলন করছি, সেই বিশ্বাসে আমরা অটুট রয়েছি। সেই বিশ্বাস নিয়ে আমরা আগামী দিনে ঐক্যবদ্ধভাবে যুগপৎ আন্দোলন চালিয়ে যাব।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করতে চাই। পাকিস্তানের যুদ্ধের সময় শান্তি কমিটি হয়েছিল। এখন সরকার শান্তি সমাবেশ করছে। তাদের আচরণ শান্তি কমিটির মতোই।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, লেবার পার্টির ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বাংলাদেশের জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা, এনডিপির ক্বারী মো. আবু তাহের, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মুফতি গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, এনপিপির ড. এ জেড এম ফরিদুজ্জামান ফরহাদ ও জাগপার খন্দকার লুৎফর রহমান।
আরও উপস্থিত ছিলেন- গণদলের এ টি এম গোলাম মাওলা চৌধুরী, ডিএল-এর সাইফুদ্দিন আহম্মেদ মনি, বাংলাদেশ ন্যাপের এম এন শাওন সাদেকী, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের ডা. সৈয়দ নুরুল ইসলাম, এলডিপির ড. রেদোয়ান আহমেদ, নুরুল আলম, ড. নেয়ামুল বশির ও এম.এম মোর্শেদ।
অপরদিকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, বেগম সেলিমা রহমান ও ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু উপস্থিত ছিলেন।