দীর্ঘ চার বছর পর নিজ নির্বাচনি এলাকা গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার জনসভায় যোগ দিতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হসিনা।
তার নির্বাচনি এলাকা টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়ায় আগামী শনিবার তিনি সফর করবেন। প্রধানমন্ত্রীর সফরকে সফল করতে স্থানীয় প্রশাসন ও দলীয় নেতা-কর্মীরা রাতদিন পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গড়ে তোলা হয়েছে চরম নিরাপদ ব্যবস্থা।
কোটালীপাড়ার টিটি (তালিমপুর তেলিহাটি) হাই স্কুল মাঠের জনসভায় শনিবার ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। পরে বিকেলে তিনি টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাবেন। প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে কোটালীপাড়া ও টুঙ্গিপাড়া এলাকায় নানা উন্নয়ন কাজ করা হচ্ছে। বিভিন্ন স্থানে টাঙ্গানো হচ্ছে নানা ব্যানার-ফেস্টুন।
এ ছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর জনসভা ঘিরে স্থানীয়দের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। দীর্ঘ ৪ বছর পর প্রধানমন্ত্রী কোটালীপাড়ায় যাচ্ছেন। যে কারণে তার নির্বাচনি এলাকার মানুষের মধ্যে আনন্দের বন্যা বয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীকে এক নজর দেখার অপেক্ষা লাখো জনতার। কোটালীপাড়াসহ গোপালগঞ্জ জেলার আশপাশের জেলা থেকেও হাজার হাজার নেতা-কর্মী এ জনসভায় যোগ দেয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন।
কোটালীপাড়া উপজেলার কান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তুষ্র মধু বলেন, ‘আমরা ভোটদিয়ে যাকে সংসদ সদস্য করি তিনি দেশের প্রধানমন্ত্রী হন। এজন্য আমরা গর্বিত। প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে কেন্দ্র করে কোটালিপাড়া এলাকায় ঈদের আনন্দ বয়ে যাচ্ছে মানুষের মনে।’
সাদুল্লাহপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ভীম চরন বাকচী বলেন, ‘আমার ইউনিয়নের ৪০ হাজার জনগণ অধির আগ্রহে বসে আছেন আগামী ২৫ তারিখের জন্য। সবার মুখেই একটি কথা কখন তাদের মা শেখ হাসিনাকে তারা কাছ থেকে দেখতে পাবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘তার ইউনিয়নের সবাই ওইদিন ঘরে তালা মেরে জনসভায় যোগ দেবেন। একটি লোকও ঘরে বসে থাকবেনা।’
কলাবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিজন বিশ্বাস বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে কোটালীপাড়ার মানুষের মধ্যে একটা আনন্দ উৎসব চলছে। দীর্ঘদিন পর শেখ হাসিনাকে কাছ থেকে দেখতে পারার আনন্দে আত্মহারা এখানকার মানুষ।’
কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মতিয়ার রহমান হাজরা বলেন, ‘দীর্ঘ ৪ বছর পর কোটালীপাড়ায় নেত্রী আগমনকে কেন্দ্র করে কোটালীপাড়াবাসী আনন্দে উদ্বেলিত। এখানকার ভোটাররা যাকে ভোট দেন, সেই তাদের প্রিয় নেত্রী প্রধানমন্ত্রীকে কাছ থেকে তারা দেখবেন, তার কথা শুনবেন এটা তাদের কাছে চরম পাওয়া।’
ব্যবসায়ী হান্নান শেখ বলেন, ‘আমাদের ভোটে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী সারা দেশে ব্যাপক উন্নতি করেছেন। তিনি দেশকে ডিজিটাল থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ করতে নানা কাজ করে চলেছেন।’
কোটালীপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান বিমল কৃষ্ণ বিশ্বাস বলেন, আমাদের প্রিয় নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটালীপাড়া টিটি (তালিমপুর তেলিহাটি) হাইস্কুল মাঠে ভাষণ দেবেন এটি সব ঘরে ঘরে এমনিতেই জেনে গেছে। কাউকে ডাকার প্রয়োজন নেই। ২৫ তারিখের জনসভা জনসমুদ্রে রুপান্তরিত হবে।’
কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ভবেন্দ্র নাথ বিশ্বাস বলেন, ‘কোটালীপাড়ার জনসভা স্মরণকালের সেরা জনসভা হবে। জনসভা ছাড়িয়ে আরও কয়েক কিলোমিটার ছাড়িয়ে যাবে জনতার ঢল। জনসভা জনসমুদ্রে পরিণত হবে।’
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহাবুব আলী খান ও সাধারণ সম্পাদক জি এম শাহাব উদ্দিন আজম বলেন, জনসভাস্থল ইতোমধ্যে প্রস্তুত করা হয়েছে। আমাদের নেত্রী প্রধানমন্ত্রীর জনসভাকে সফল করতে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। এদিন প্রধানমন্ত্রী কোটালীপাড়া ও টুঙ্গিপাড়ার ৪৮টি উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন করবেন বলে তারা জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্বাচনি এলাকার উন্নয়ন প্রতিনিধি শহীদ উল্লা খন্দকার জানান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে কেন্দ্র করে নানা প্রস্তুতিমূলক কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বলেন, ‘যেদিন থেকে কোটালীপাড়াবাসী জেনেছে তাদের ভালবাসার নেত্রী কোটালীপাড়া আসবেন, সেদিন থেকে তারা দিনক্ষণ গুনতে শুরু করেছেন, কখন ২৫ তারিখ আসবে, কখন তারা তাদের প্রিয় নেত্রীকে দেখতে পাবেন, কথা শুনতে পাবেন।’
কোটালীপাড়া জনসভার প্রধান সমন্বয়ক বাগেরহাট-০১ আসনের সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘কোটালীপাড়ার জনসভার মাঠ উপচে অন্তত ৫ কিলোমিটার এলাকা ওই দিন জনসমুদ্রে পরিণত হবে। আমরা তো কাউকে ঠেকিয়ে রাখতে পারব না। আগের জনসভায় যে মানুষের ঢল লক্ষ্য করা গেছে, তা থেকে আমরা দেখি নেত্রীর প্রতি মানুষের কত ভালবাসা। এখানকার শতভাগ মানুষ যে নেত্রীকে ভালবাসে, তা প্রমাণ করবে আগামী ২৫ তারিখের জনসভায়।’