নির্বাহী আদেশে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাময়িক মুক্তি দেয়ার সময় রাজনীতি করা নিয়ে কোনো শর্ত দেয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। কারাগারের বাইরে থাকা খালেদা জিয়া রাজনীতি করতে পারবেন কি না, এনিয়ে আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ কয়েকজন নেতা একেক ধরনের বক্তব্য দেয়ার এ বিষয়ে কথা বলেন আইনমন্ত্রী।
বাংলাদেশ ইনস্টিউট অব ইন্ট্যারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিস) মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠান শেষে বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের প্রশ্নে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘উনি (খালেদা জিয়া) ঢাকায় নিজ বাসায় থেকে চিকিৎসা নেবেন, দেশের বাইরে যেতে পারবেন না। এর বাইরে কোনো শর্ত নাই। আপনারা প্রশ্ন করেছেন উনি রাজনীতি করতে পারবেন কিনা। আমি সত্য বলি বলেই বলেছি, রাজনীতি করার ব্যাপারে কোনো শর্ত নাই।’
খালেদা জিয়ার পরিবারের আবদনের ভিত্তিতে ২০২০ সালের ২৪ মার্চ শর্ত সাপেক্ষে সরকার নির্বাহী আদেশে তার সাজা স্থগিত করে ছয় মাসের মুক্তি দেয়। পরে একই শর্তে কয়েক দফায় সেই মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়।
খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে তার পরিবারের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন জমা দেয়া হয়। ওই আবেদনে আইনি মতামত নিতে তা আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। আইনমন্ত্রীর মতামতাদের পর নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে সরকার।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং যুগ্মসাধারণ সম্পাদক, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ দাবি করেন, খালেদা জিয়ার রাজনীতি করার কোনো সুযোগ নেই। কিন্তু আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলির সদস্য, কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক জানান, খালেদা জিয়া রাজনীতি করতে পারবেন, তবে নির্বাচন করতে পারবেন না।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘উনি নির্বাচন করতে পারবেন না কারণ উনি দণ্ডিত, রাজনীতি করতে পারবে না এমন কথা কোথাও নাই। তার যে আবেদন তার ভাই করেছেন, সেখানে বলা আছে তিনি গুরুতর অসুস্থ। তার যদি আরও ভালো চিকিৎসা না হয়, তাহলে তার জীবন বিপন্ন হবে। তাকে মানবতার খাতিরে প্রধানমন্ত্রী দণ্ড স্থগিত রেখে মুক্তি দিয়েছেন। তিনি (খালেদা জিয়া) অসুস্থ, রাজনীতি করতে পারবেন কিনা, সেটি আমি বারবার বলেছি। স্বাভাবিকভাবে মানুষ মনে করে খালেদা জিয়া অসুস্থ তার রাজনীতি করার অবস্থা নেই, এটাই বাস্তবতা।’
সংবিধানের আলোকে আগামী নির্বাচন হবে জানিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনে যেন সবাই আসে এটা আওয়ামী লীগ চায়। কিন্তু কে আসবে, কে আসবে না সেটা তাদের সিদ্ধান্ত। জাতির পিতা যে গণতান্ত্রিক আদর্শ ও সংবিধান দিয়ে গেছেন, তার বাইরে আমরা এক চুলও যাব না। ১৯৯৬ এর মত ভোটারবিহীন নির্বাচন আমরা করব না। নির্বাচন ২০১৪, ২০১৮ সালের মত সুষ্ঠু হবে।