বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া রাজনীতি করতে পারবেন কি পারবেন না তা নিয়ে ইতোমধ্যে পরস্পরবিরোধী বক্তব্য দিয়েছেন সরকারের তিন মন্ত্রী। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও সেই বিতর্কে শরিক হলেন।
বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘খালেদা জিয়া দণ্ডিত আসামি। তিনি রাজনীতি করতে পারবেন না।’
এর আগে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বলেছিলেন যে বিএনপি প্রধানের রাজনীতি করায় বাধা নেই।
অপরদিকে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেছেন, দণ্ডিত আসামি হিসেবে খালেদা জিয়া রাজনীতি করতে পারবেন না।
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার দলের এক যৌথসভায় বক্তব্য দেন ওবায়দুল কাদের।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়াকে দণ্ড দিয়েছেন আদালত। তিনি সেই দণ্ড থেকে মুক্তি পাননি। মানবিক কারণে সরকার তাকে বাসায় থাকার সুযোগ দিয়েছে। তাহলে তার রাজনীতি করার প্রশ্ন আসে কোথা থেকে? দণ্ডিত একজন কয়েদি হিসেবে খালেদা জিয়ার রাজনীতি করার সুযোগ নেই।’
আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক ও মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, মাহবুব-উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদসহ সহযোগী সংগঠনগুলোর সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকরা যৌথ সভায় উপস্থিত ছিলেন।
‘মেধাবীরা রাজনীতিতে না এলে মেধাহীনরা এমপি-মন্ত্রী হবে’
এর আগে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের ৩৫ বছর পূর্তির অনুষ্ঠানে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দেশের রাজনীতিতে আরও চরিত্রবান লোক দরকার। ক্ষমতার মঞ্চে চরিত্রবানরা না থাকলে চরিত্রহীনদের খপ্পরে থাকবে দেশ। ভালো মানুষ না থাকলে খারাপ মানুষ দেশ চালাবে। মেধাবী মানুষ রাজনীতিতে না এলে মেধাহীনরা এমপি-মন্ত্রী হবে।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘দেশের রাজনীতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে যারা বেশি বেশি নীতির কথা যারা বলে তারাই দুর্নীতি করে। বেশি গণতন্ত্রের কথা তারাই বলে, যাদের মুখে গণতন্ত্র, অন্তরে স্বৈরাচার। এদের চিহ্নিত করতে হবে।’
সন্ত্রাস কত প্রকার ও কী কী তা বিএনপির চেয়ে ভালো আর কেউ জানে না মন্তব্য করে কাদের বলেন, ‘শহীদ মিনার এখন শান্তিপূর্ণ প্রভাতফেরির চমৎকার জায়গা। এই শহীদ মিনারে বিএনপি প্রথম রক্ত ঝরিয়েছে। এখন তারাই সন্ত্রাসের কথা বলে।’
অর্থ ছাড়া আজকাল রাজনীতি বড়ই কঠিন দাবি করে তিনি বলেন, ‘শুধু আদর্শ দিয়ে আজকাল রাজনীতি চলে না। এ দেশে এখন একজন আদর্শবাদী নেতা শুধু আদর্শের জোরে নির্বাচনে দাঁড়িয়ে জিততে পারেন না। টাকা ছাড়া কর্মীও পাওয়া যায় না।
‘এ অবস্থায় শিশু কিশোরদের একটি সংগঠন গড়ে তোলা খুবই কঠিন কাজ। সেই জায়গায় শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদ একটি সৃজনশীল প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠানের শিশু-কিশোররাই ভবিষ্যতে দেশ পরিচালনায় দায়িত্ব পালন করবে।’