বাসায় খাবার পরিবেশন থেকে শুরু করে ফাস্টফুড রেস্টুরেন্টে এখন ব্যাপক জনপ্রিয় লেটুস। রোগ প্রতিরোধসহ খাবারের স্বাদ বাড়াতে লেটুস পাতার জনপ্রিয়তা বাড়ছে। চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষকরা এখন লেটুস চাষে ঝুঁকছেন। গত কয়েক বছরে কুমিল্লায় জনপ্রিয় হয়ে ওঠেছে লেটুস চাষ।
কুমিল্লা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ সূত্রে জানা যায়, এ বছর এক হেক্টর জমিতে লেটুস চাষ করা হয়েছে। যার মধ্যে আদর্শ সদর উপজেলা, চান্দিনা, বুড়িচং ও গোমতীর চরেই বেশি চাষ হয়েছে।
পুষ্টিবিদরা জানান, লেটুসপাতা উচ্চ ভিটামিন সমৃদ্ধ। ক্যান্সার প্রতিরোধে লেটুসপাতা বেশ উপকারী।
গৃহবধূ মেহজাবিন রহমান বলেন, ‘ঘরে যখন মেহমান আসে কিংবা কোনো উৎসব উপলক্ষে খাবার আয়োজন করা হয়, তখন বাজার থেকে লেটুসপাতা নিয়ে আসি। সালাদ তৈরিতে লেটুস পাতার জুড়ি নেই। আগে বাজারে লেটুস কম পাওয়া যেত। এ বছর বাজারে লেটুস পাতার বেশ ভালোই সরবরাহ আছে।’
কুমিল্লা পিজ্জা কলজোনের স্বত্তাধিকারী আহসান হাবীব বলেন, ‘আমরা পিজ্জা বিক্রি করি। ক্রেতার সামনে পিজ্জা পরিবেশন করতে লেটুস পাতা ব্যবহার করি। গত কয়েক বছর অন্য জেলায় উৎপাদিত লেটুস কুমিল্লায় নিয়ে আসত পাইকাররা। এখন আমাদের জেলায় লেটুস চাষ হচ্ছে। আমরাও সাশ্রয়ী মূল্যে লেটুস পাতা কিনতে পারছি। এখানে বাজারগুলোতে ১০০ টাকা কেজি দরে লেটুসপাতা বিক্রি হয়।’
কুমিল্লা বুড়িচং উপজেলার ভয়েরপাড় এলাকায় প্রথমবার লেটুস চাষ করা সৌরভ ভৌমিক জানান, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে বীজ পেয়ে পরীক্ষামূলকভাবে লেটুস চাষ করেছেন। ৭ শতক জমিতে লেটুস উৎপাদন হয়। খুচরা বিক্রি করেছেন ১০০ টাকা কেজি দরে। আগামী বছর আরও বড় পরিসরে লেটুস চাষ করবেন বলে জানান সৌরভ।
বুড়িচং উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) বানিন রায় জানান, চলতি বছর বুড়িচং উপজেলায় অনেকেই লেটুস চাষ করেছেন। চাহিদা ভালো থাকায় কৃষকরা ভালো দাম পেয়েছেন। লেটুস চাষে কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছি। বাজারে ভালো বীজ পাওয়া যায়। লেটুস চাষে খরচ কম মুনাফা বেশি।
কুমিল্লা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মিজানুর রহমান জানান, কুমিল্লার মাটি লেটুস চাষের জন্য বেশ উপযোগী। এ বছর এক হেক্টর জমিতে লেটুস চাষ করেছে কৃষকরা। আগামী বছর অন্তত ৫ হেক্টর জমিতে যেন লেটুস চাষ হয় সে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বীজ নিয়ে কোনো সমস্যা নেই।
তিনি আরও জানান, স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তারা লেটুস চাষে কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছেন।