বাংলাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা করতে হলে বছরে খরচ করতে হবে ৮০০ কোটি টাকা। আর্থিক সক্ষমতা ও খরচ বিবেচনায় বাংলাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা করার প্রস্তাব বাংলাদেশ আপাতত করছে না।
মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম এ কথা বলেন।
সাংবাদিকদের প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা করার বিষয়টির সঙ্গে আর্থিক সংযোগ আছে। ৫/৬ বছর আগে আমরা হিসাব করে দেখেছি, এজন্য প্রতিবছর ৮০০ কোটি টাকা লাগবে। আমাদের বিবেচনা করতে হবে এত টাকা খরচ করা যুক্তিসঙ্গত হবে কি না। তবে এই সক্ষমতা একদিন বাংলাদেশের তৈরি হবে। এই মুহূর্তে এটার পক্ষে বেশি মতামত আসবে না।’
মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম। ছবি: নিউজবাংলা
জাতিসংঘের ছয়টি দাপ্তরিক ভাষা রয়েছে- আরবি, চায়না, ইংরেজি, ফরাসি, রাশিয়ান ও স্প্যানিশ।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন এর আগে ২০২১ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বলেছিলেন, দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে বাংলা চালুর প্রস্তাবে কোনো সদস্য রাষ্ট্রের বিরোধিতা নেই। তবে সেজন্য যে খরচ হবে তা বাংলাদেশকে বহন করতে হবে। প্রাথমিক আলোচনায় সেজন্য প্রতি বছর ৬০০ মিলিয়ন ডলার প্রয়োজন হবে।
ড. মোমেন সেদিন আরও বলেছিলেন, জাপানি, হিন্দি ও জার্মান ভাষাকেও জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা করার প্রস্তাব করা হয়েছিল। নিজস্ব খরচ বহনের শর্তের কারণে সেগুলোও দাপ্তরিক ভাষা হয়নি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১০ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে বলেছিলেন যে বাংলা ভাষাকে জাতিসংঘের একটি অফিসিয়াল ভাষা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।
এদিকে মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানোর পর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বাংলাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য আবারও বিশ্ব সংস্থাটির কাছে দাবি জানানোর কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘৩৫ কোটি মানুষের মায়ের ভাষা বাংলা। অথচ এই ভাষা আজ পর্যন্ত জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষার স্বীকৃতি পায়নি। আমরা আবারও জাতিসংঘের কাছে দাবি জানাব, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের পাশাপাশি বাংলাকে যেন জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষার স্বীকৃতি দেয়া হয়।’